প্রতীকী চিত্র
দলের ‘কঠিন’ সময়ে বামপন্থী ভাবধারায় বিশ্বাস রেখে যে তরুণ-তরুণীরা সক্রিয়ভাবে দল করছেন, তাঁদের একটা অংশকে এ বার শিলিগুড়ি পুরভোটে প্রার্থী করা নিয়ে বামফ্রন্টের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, বিশেষ করে চার-পাঁচ বারের কাউন্সিলর, অসুস্থ, প্রবীণ নেতানেত্রীদের বদলে এখনই নতুন মুখ সামনে আনার কথা অনেকেই বলছেন। তাঁদের যুক্তি, প্রয়োজনে প্রবীণেরা বা পুরানো কাউন্সিলরদের একাংশ নতুনদের জিতিয়ে আনার দায়িত্ব নিক। এখনও তা না করলে আগামিদিনে শিলিগুড়িতে বামপন্থী দলে নবীন প্রজন্মকে ধরে রাখাটা শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে।
শিলিগুড়িতে এখনও পুরসভা, মহকুমা পরিষদ বামেরা ধরে রাখতে পেরেছে। দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের অনেক নেতাই মনে করছেন, শহরের বিধায়ক এবং মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে সামনে রেখে তা অনেকটাই সম্ভব হয়েছে। কিন্তু অশোকবাবুরও বয়স বেড়েছে। তৃণমূলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিজেপি বাড়ছে। তাই নতুন প্রজন্মকে তুলে না আনলে, আগামী পাঁচ বছর পর সিপিএম বা বামেদের এ শহরে কী হাল হবে তা পরিস্কার করে বলা সম্ভব নয়। ২০১৫ সালের পুরভোটে শরিক থেকে সিপিএম, শহরের একাধিক ওয়ার্ডে তরুণ প্রজন্মকে দাঁড় করিয়ে জয় পেয়েছিল বামেরা। বামফ্রন্টের সেবার জেতা ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫, ১৯, ২২, ২৪, ২৬, ২৯, ৩২, ৩৩, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে তুলনায় অল্পবয়সিরা জেতেন। তাঁদের কয়েকজন আবার প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। এ বারও যাতে বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানুষের কাছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির তরুণ প্রজন্মের আরও একটা অংশকে তুলে ধরা যায়, সেই আলোচনা চলছে। সিপিএমের কয়েকজন নেতার কথায়, পুরনো মুখগুলোকেই বছরে পর-বছর মানুষ দেখছেন।
বামফ্রন্টের এক নেতা জানান, গত কয়েক বছরে বামেদের আন্দোলনে ছাত্র, যুবদের বড় অংশ সামনে থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। একাধিক তরুণ নেতানেত্রী জেলও খেটেছেন। রাজনৈতিকভাবে এদের অনেকেই পরিণত হয়ে উঠেছেন। নতুনদের ভোটে ময়দানে নামিয়ে দিলে ফ্রন্ট সম্পর্কে শহরবাসীর মধ্যে ভাল বার্তা যাবে। তেমনই, নতুন ছেলেমেয়েরা আরও বেশি করে বামপন্থী রাজনীতিতে আসতে উৎসাহ পাবে। ফ্রন্টের দায়িত্বপ্রাপ্তদের এই বিষয়টি মাথা রাখা দরকার।
জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেছেন, ‘‘পুরনো এবং নতুন সমন্বয়েই প্রার্থী তালিকা করা হবে। শিলিগুড়িতে আমরাই সবচেয়ে বেশি নতুন প্রজন্মকে তুলে আনছি। প্রার্থী তালিকাতেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’