health

করোনায় হোঁচট টিকায়

টানা লকডাউনে মার্চ মাসের শেষ থেকে কার্যত মাস তিনেক ঘর থেকে বের হননি বাসিন্দারা। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই টিকাকরণের পুরো প্রক্রিয়াই মার খেয়েছে।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:০৬
Share:

ছবি:শাটারস্টক।

চিকিৎসকেরা বলে থাকেন শিশুর জন্মের পরেই টিকাকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। করোনা আবহে ধাক্কা লেগেছে তাতেও। গত এপ্রিলে করোনা পরিস্থিতির জন্য সমস্ত টিকাকরণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। টানা লকডাউনে মার্চ মাসের শেষ থেকে কার্যত মাস তিনেক ঘর থেকে বের হননি বাসিন্দারা। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই টিকাকরণের পুরো প্রক্রিয়াই মার খেয়েছে। বিভিন্ন জেলায় ছবিটা একই।
বিশেষ করে ১ বছর বয়সের মধ্যে সম্পূর্ণ টিকাকরণ করা হয়। এই সময়ের মধ্যে সমস্ত টিকা দেওয়া না হলে সম্পূর্ণ টিকাকরণ (ফুল ইমুনাইজেশন) করা হল না বলে ধরা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে তা ব্যাহত হয়েছে বিভিন্ন জেলাতেই। এপ্রিল মাসে যে শিশুটির ১১ বা ১২ মাস বয়স ছিল, জুলাই মাসে তার বয়স হয়েছে ১৪ বা ১৫ মাস। তখন টিকাকরণ হলেও তাকে কিন্তু সম্পূর্ণ টিকাকরণের মধ্যে আনা গেল না বলে ধরা হচ্ছে।
শুক্রবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শনে যান ন্যাশনাল হেল্থ মিশনের মিশন ডিরেক্টর সৌমিত্র মোহন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য, স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। মিশন ডিরেক্টর বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে শুরুতে টিকাকরণ বন্ধ হয়ে ছিল। করোনার জেরে ২-৩ মাস লকডাউন গিয়েছে। মানুষ বাড়ি থেকে বার হননি। সকলেরই নজর ছিল করোনার উপরে। জেলাগুলোতে ধীরে ধীরে টিকাকরণ স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করা হয়।’’ তিনি জানান, এপ্রিলের পর থেকে টিকাকরণ স্বাভাবিক করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। জেলাগুলোর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অগস্ট থেকে জেলাগুলোতে টিকাকরণের জন্য ‘আউট রিচ প্রোগ্রাম’ অর্থাৎ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে টিকাকরণ কর্মসূচি করতে জোর দেওয়া হয়েছে। তাতে পরিস্থিতি কিছুটা বদলাচ্ছে। তবে রাজ্যে দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গে টিকাকরণ পরিস্থিতি তুলনায় ভাল বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তিনি জানান, উত্তরবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় কিছুটা ভাল। তাই টিকাকরণের কাজ অনেকটাই ভাল ভাবে করা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গন্যাস্টিক ল্যাবে করোনা পরীক্ষার উপর জোর দিতে গিয়ে টিবি ল্যাবরেটরিতে কাজের ক্ষতি হয়েছে। টিবির পরীক্ষা ব্যবস্থা অনেক সময়ই চালু রাখা যায়নি। কারণ ওই ল্যাবের কর্মীদের অনেককেই করোনা পরীক্ষার কাজে নেওয়া হয়েছে।
করোনা আক্রান্তদের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য জন্য কোমর্বিডিটি রোগীদের সমীক্ষা চলছে। তার প্রাথমিক রিপোর্ট মিলেছে। সূত্রের খবর, যা যা থাকলে কোমর্বিডিটি রয়েছে ধরা হয় তার সবকটিই ১০-১২ শতাংশ হারে দেখা গিয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা জানান, করোনা পরিস্থিতিতে পরিষেবা বাড়াতে ৭০০-৮০০ আরএমও এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর র‌্যাঙ্কের চিকিৎসক নিয়োগ হবে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ‘ক্যাথল্যাব’ চালু, সিটি স্ক্যান যন্ত্র দ্রুত আনার চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানানো হয়।

Advertisement

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement