অবরোধ: বিধায়ক মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়েছেন অভিযোগে রাস্তা অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
প্রথম বর্ষের নিহত ছাত্রের বাড়িতে গেলে বিধায়ক উদয়ন গুহকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিল অলকনিতাই দাসের পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, সমবেদনা জানানোর ছল করে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়েছেন উদয়ন। তবে উদয়ন তা অস্বীকার করেছেন।
তৃণমূলের অন্দরেই খবর, মাজিদ আনসারির পরে অলকনিতাই দাসকে খুনে জেলায় শাসক দলের অন্তর্দ্বন্দ্বে ক্ষুব্ধ শীর্ষ নেতৃত্ব। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন পদ নিয়ে যে ক্ষোভ প্রকাশ্যে দেখানো হয়েছে, তা নিয়েও শীর্ষ নেতৃত্ব উষ্মা গোপন রাখেননি। সোমবার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, অলকনিতাই দাস খুনে এফআইআর-এ যে দুই নেতার সাবির সাহা চৌধুরী সহ যে দু’জন ছাত্রনেতার নাম রয়েছে, দু’জনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তেমনই সুটকাবাড়ির পঞ্চায়েত সদস্য রসিবুল হককেও দল থেকে বহিষ্কার করা হল। রসিবুল প্রকাশ্যে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। পার্থবাবু বলেন, ‘‘দলবিরোধী কাজ বরদাস্ত করা হবে না।’’
এই পরিস্থিতিতে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতেই উদয়ন এ দিন অলকনিতাইবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন বলে তৃণমূলের একটি অংশের দাবি। সাবির উদয়নবাবুর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের শীর্ষ নেতাদের ক্ষোভ বোঝাই যাচ্ছে। তিন জনকে এক সঙ্গে বহিষ্কার করা হল। দলের জেলা নেতারা এখন চাইছেন, শীর্ষ নেতাদের সামনে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে।’’
তবে দিনহাটা ১ ব্লকের কোয়ালিদহ গ্রামের নিহত ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে উদয়নবাবু মামলা তুলে নেওয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়েছেন, এমন অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা মমতা দাস বলেন, ‘‘উদয়নবাবু সমবেদনা জানানোর ছল করে মামলা তুলতে হুমকি দিয়েছেন।’’ তারপরেই স্থানীয়রা পথ অবরোধ করেন। মৃত ছাত্রের বাবা হেমন্ত দাসও বলেন, ‘‘উদয়নবাবু বলেন, যাঁদের নাম অভিযোগে রয়েছে, তাঁরা সকলেই ঘটনায় যুক্ত নন। তারপরেই তিনি অভিযোগ তুলে নিতে বলেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘উদয়নবাবুর লাঠিয়াল বাহিনীই আমার ছেলের প্রাণ কেড়েছে। আমি তাঁরও শাস্তি চাই।’’ উদয়ন অবশ্য বলেন, ‘‘যখন গিয়েছি, তখন অনেকে ছিলেন। শুধু সমবেদনাই জানিয়েছি। মামলা তোলার কথা বলেছি বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা অবাস্তব।’’