প্রতীকী ছবি
করোনা সংক্রমণের কারণে টানা লকডাউনের জেরে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছে পর্যটন শিল্প। উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও জঙ্গল লাগোয়া ছোট ছোট হোম-স্টে, লজ বা রিসর্টের মালিক ও কর্মীরা চরম দুর্দশায় পড়েছেন। এই অবস্থা থেকে বেরনোর জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অর্থনৈতিক প্যাকেজের দাবি করেছেন শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। সরকারকে পর্যটন নিয়ে নানা পরামর্শ এবং প্রস্তাব দিয়েছে বণিক সভা সিআইআই। এরমধ্যে হোম-স্টে, ছোট লজ বা রিসর্টের কর্মীদের ১০০ দিনের কাজে নিয়োগের প্রস্তাব কলকাতা এবং দিল্লিতে গিয়েছে।
লকডাউনের জেরে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের পর্যটন ক্ষেত্রে প্রতিদিন প্রায় ১৯ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এখন যে কর্মীরা কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থার সুপারিশ নিয়ে চলছে আলোচনা। বুধবার থেকে দেশের অর্থমন্ত্রী অর্থনৈতিক প্যাকেজের ঘোষণা করা শুরু করেছেন। পর্যটন শিল্পের জন্য ঠিক কোথায় কী ভাবে কতটা সুযোগ আসবে তা ধীরে ধীরে বোঝা যাবে। বণিকসভার বক্তব্য, কর, ঋণ, অনুদান-সহ নানা অর্থনৈতিক প্রস্তাব, পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি জরুরি পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের জীবিকার ব্যবস্থা করা। কারণ, বহু কর্মী ইতিমধ্যে কাজ হারিয়েছেন। আগামী দিনে বহু কর্মীর কাজ হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পাহাড়, জঙ্গল লাগোয়া রিসর্ট, ডুয়ার্স বা তরাইয়ে কর্মীদের একটা বড় অংশকে ১০০ দিনের কাজে নিয়োগ করা গেলে, তাঁদের হেঁসেলে হাড়ি চড়ার ক্ষেত্রে অন্তত কিছু সুরাহা হবে।
সিআইআই-এর পর্যটন বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে একটি অনলাইন বৈঠক করেন। তাতে পর্যটন সংগঠনের কর্তা সম্রাট সান্যাল, রাজ বসু ছাড়াও সিকিমের শিল্প বাণিজ্য দফতরের তরফে নানা পরামর্শ দেওয়া হয়। সংগঠনের উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান সঞ্জিত সাহা জানান, ‘‘আমাদের সংগঠনের জাতীয় পর্যটন কমিটি, টাস্কফোর্সের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক, শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রক এবং অর্থমন্ত্রকে আমাদের রিপোর্ট জমা পড়েছে। রাজ্যকেও বিষয়গুলি জানানো হচ্ছে। আগামী এক বছরের জন্য সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা এরমধ্যে অন্যতম।’’
নতুন আর্থিক বছরে তৃতীয় দফার লকডাউনে এসে ১০০ দিনের কাজে শর্ত মেনে ছাড় দিয়েছে সরকার। তারপরেই আবাস যোজনার কাজ, নার্সারি পরিচর্যা, চা বাগানের নর্দমার কাজ শুরু হয়েছে। এরসঙ্গে রাস্তা, নিকাশি সংস্কার, বনসৃজনের মতো কাজের কথা ভাবা হচ্ছে। এই প্রকল্পে একদিনের কাজের মজুরি ২০৪ টাকা। পর্যটন সংগঠনের কর্তারা জানান, পাহাড় এবং ডুয়ার্সে প্রচুর ১০০ দিনের কাজের সুযোগ থাকে। সেখানে হোমস্টে, লজ বা ছোট রিসর্টের কর্মীদের জবকার্ড করে কাজ দেওয়া গেলে তাঁরা আপাতত সংসার চালাতে পারবেন। এতে জেলা প্রশাসনগুলির হাতে ১০০ দিনের কাজের নতুন লোকের আলাদা তালিকাও থাকবে। যা প্রয়োজনে কাজে লাগানো যাবে।