প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, রেশন কার্ড বা জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে নাম না থাকলেও আগামী দু’মাসে নিখরচায় মাথাপিছু দেওয়া হবে ৫ কেজি করে চাল বা গম এবং ১ কেজি করে ডাল। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে গিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসনে। কী ভাবে? দার্জিলিং জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, জেলায় কত জন শ্রমিকের কার্ড আছে, কত জনের নেই, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এফসিআইয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, যে পরিযায়ী শ্রমিকের রেশন কার্ড নেই, তাঁরাই শুধু এই বরাদ্দ পাবেন। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা মতো, সেই শ্রমিক যদি ভিন রাজ্যেরও হন, তা হলেও বরাদ্দ পাবেন। এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের এবং ভিন রাজ্যের কত শ্রমিক এখন দার্জিলিং জেলায় আছে, তার পরিমাপ হবে কী করে?
শাসকদল তৃণমূলের একটি সূত্র থেকে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার খুব ভাল করেই জানে, এই ধরনের হিসেব তৈরি করা রীতিমতো কঠিন। তা যেমন জটিল, তেমনই সময় সাপেক্ষ। অর্থমন্ত্রী হঠাৎ এই ঘোষণা করে দিয়ে রাজ্য বিজেপি এবং বিজেপির সমব্যথীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিলেন। এর ফলে আন্দোলনে প্রশাসনিক স্তর থেকে জনজীবন, সব থেকেই সমস্যা তৈরি হতে পারে। করোনার মতো জরুরি পরিস্থিতিতে তা একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। উল্টো দিকে, বিজেপির তরফে বলা হচ্ছে, রাজ্য তথা জেলা প্রশাসন এই তালিকা করে রাখেনি কেন? তাঁদের একটি অংশ দাবি করেছে, এনপিআর বা এনআরসি হলে এই তালিকা রাখা সহজ হবে।
শিলিগুড়ি মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য জানিয়েছেন, এই বিষয়ে আজ মঙ্গলবার প্রশাসনের কর্তারা আলোচনায় বসবেন। কাদের সেই বরাদ্দ দেওয়া হবে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে। শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায় বলেন, ‘‘কারা পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে গণ্য হবেন, তা কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করে দেয়নি। আমরা রাজ্য সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। যে ভাবে নির্দেশ আসবে সেভাবেই কাজ হবে।’’
এ দিকে এফসিআইয়ের শিলিগুড়ির এক কর্তা বলেন, ‘‘শ্রমিকদের বরাদ্দের জন্য মে মাসে ১২০০ মেট্রিক টনের মতো চাল এসেছে। জেলা খাদ্য দফতর সেগুলি এখনও নেয়নি। এদিকে জুনের বরাদ্দও আসা শুরু হয়েছে। গুদামে জায়গার অভাব রয়েছে। ফলে সময়ের বরাদ্দ সময়ে না নিলে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়।’’
পরিযায়ী শ্রমিকদের বরাদ্দ মে মাস থেকেই দেওয়ার কথা। অন্য দিকে জুন মাসের রেশনের ধারাবাহিক বরাদ্দ কিছু দিনের মধ্য শুরু হওয়ার কথা। পরিযায়ী শ্রমিকদের বরাদ্দ এবং রেশনের ধারাবাহিক বরাদ্দ দেওয়া একসঙ্গে শুরু হলে রেশন দোকানগুলিতে ভিড় আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ডিলারদের। তাতে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়বে।
জেলা খাদ্য দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, মে মাসের বরাদ্দ দেওয়ার সময় এখনও রয়েছে। ঠিক সময়ে সেই বরাদ্দ নিয়ে বিলি হবে।