ছবি পিটিআই
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক নিয়ে খুশি হলেও আগামীদিনে পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে একেবারে আশাবাদী নন উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার নবান্নে বিভিন্ন শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা বিভিন্ন কর ছাড়, পর্যটনের টাক্স ফোর্স গঠনের মত প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রীকে বিবেচনার জন্য বলেছেন। প্রতিটি বিষয় মনে দিয়ে শুনলেও কোনও ঘোষণা করেননি মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিংহকে তিনি অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের জন্য তৈরি টাক্স ফোর্সের কাছে বিষয়টি রাখার কথা অবশ্য বলেছেন। পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, রাজ্যের এখন সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকারের বিষয় স্বাস্থ্য। তার মাঝেও মুখ্যমন্ত্রী বা সরকার শিল্পের কথা শুনছেন। এটা অত্যন্ত ভাল দিক। কিন্তু বিরাট সংখ্যক জড়িত মানুষকে নিয়ে গঠিত এই শিল্প আগামীতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে।
রাজ্যের মধ্যে উত্তরবঙ্গ, পাশ্ববর্তী সিকিম এবং নেপাল-ভুটানকে ঘিরেই বিরাট পর্যটন ব্যবসা চলে। ইতিমধ্যে লকডাইনের আগেই ব্যবসায়ীরা জানিয়ে দিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে বিভিন্ন ক্ষেত্র মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। হোটেল, লজ বা হোম-স্টে’র ব্যবসায় প্রতিদিন ১১ কোটি টাকা ক্ষতি চলছে। এরসঙ্গে রয়েছে পরিবহণ, ট্রাভেল এজেন্ট ও গাইডদের ব্যবসার ক্ষতির হিসাব। সব মিলিয়ে আগামী তিনমাসের বিরাট লোকসানের আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে ট্যুর, পরিবহণ, বুকিং বাতিলের পরিমাণ ১০০ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলেছে।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সরকার, মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কথা শুনেছেন, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমাদের শিল্পে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ জড়িত। আগামী তিন মাস বা ছ’মাস পর কী হবে তা জানি না।’’ তিনি জানান, ক্ষতি সামলাতে না পেরে ব্যবসা বন্ধ, গাড়ি-বাড়ি বিক্রি, কর্মী ছাঁটাই, কোটি কোটি টাকা আটকে থাকার সম্ভাবনাই প্রবল।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, ২০১৫-তে ভূমিকম্প, ২০১৭তে পাহাড়ে ১০৪ দিন বন্ধের জের পরে ছ’মাস টানতে হয়েছে। পরে নোটবন্দি, জিএসটি-জেরেও ধাক্কা এসেছিল।