ফাইল চিত্র
যে এলাকাগুলি থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা, সেই ‘হটস্পট’-এর তালিকায় এ বার কালিম্পং-ও। ওই এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর পরিবারের ১০ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। ওই মহিলা পরিবার এবং তাঁর সংস্পর্শে আসা অন্তত ১০০ জনকে হাসপাতালের কোয়রান্টিন বা হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। সে কারণে সমস্ত সাবধানতা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
প্রশ্ন হচ্ছে, ওই মহিলার সংস্পর্শে এসেছেন, এমন লোকের সংখ্যা কত? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওঁর সংস্পর্শে এসেছেন, এমন অন্তত ১০০ জনকে বিভিন্ন ভাবে কোয়রান্টিনে নেওয়া হয়েছে। কারণ, শুধু ওই মহিলার সঙ্গে বিমানের সহযাত্রীই ছিলেন ২৫ জন। এ ছাড়াও মহিলার পরিবারের লোকজন, তাঁর আত্মীয়, পড়শি মিলিয়ে সংখ্যাটা ১০০ হয়ে গিয়েছে, জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে আরও বলা হয়েছে, আক্রান্ত ১০ জনের মধ্যে শিলিগুড়িতে মহিলার পরিবারের চার জন রয়েছেন। কালিম্পঙে থাকা তাঁর ঘনিষ্ঠ ছ’জনের শরীরেও সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। তার মধ্যে অধিকাংশই পরিবারের সদস্য। কালিম্পঙে আক্রান্তদের একজন বাড়ির পরিচারিকা। মহিলা চিকিৎসার জন্য কালিম্পঙের এক চিকিৎসকের কাছে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে দেখাতে গিয়েছিলেন। তাঁর শরীরে সংক্রমণ না মিললেও তাঁকে হোম কোয়রান্টিনে থাকতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি জায়গায় গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই মতো ওই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অনেককেই কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য দফতর বলছে, তার পরেও বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘বর্তমানে কালিম্পং হটস্পটের তালিকায় রয়েছে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক এবং চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন, হটস্পট চিহ্নিত হওয়া মানেই সেটা করোনার ক্ষেত্রে খুবই স্পর্শকাতর এলাকা। সেখান থেকে কেউ অন্যত্র যাবেন না বা বাইরের লোক খুশি মতো সেখানে যেতে পারবেন না। তাতে রোগ সংক্রমণের প্রবণতা বাড়বে। হটস্পটের তালিকায় থাকা এলাকাগুলোতে লকডাউন দীর্ঘস্থায়ী করা হবে। তা ছাড়া সেখানে যতটা বেশি সম্ভব বাসিন্দাদের নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। যাতে কোথাও রোগ লুকিয়ে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। কারও শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়লে সে ক্ষেত্রে কোয়রান্টিনে প্রয়োজনে আইসোলেশনে পাঠাতে হবে। সে কারণে র্যাপিড কিট পেলে সেই জায়গাগুলোতে বেশিরভাগ মানুষের নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। বহু সংখ্যক মানুষের চিকিৎসার প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখতে হবে।
ওই মহিলা গত ১৯ মার্চ মেয়েকে নিয়ে চেন্নাই থেকে চিকিৎসা করিয়ে ফিরেছিলেন। তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্য যাদের শরীরে করোনা পজিটিভ মিলেছে তাদের সংস্পর্শে আসা ৪৭ জন বর্তমানে কোয়রান্টিনে রয়েছে কালিম্পঙেই। দুটি আলাদা জায়গায় তাঁদের রাখা হয়েছে। একটিতে ২৪ জন এবং অপরটিতে বাকিদের রাখা হয়েছে। জলপাইগুড়ির কোয়রান্টিনে রয়েছে অনেকে। হোম কোয়রান্টিনে রয়েছেন কয়েক জন।