Coronavirus

বাগান খোলা নিয়ে বৈঠকে রাজ্য

দূরত্ববিধি মেনে কাজ করা কি সম্ভব, উঠছে সেই প্রশ্নও।মালিক থেকে শ্রমিক, চা পর্ষদের কর্তা থেকে প্রশাসনের কর্তারা সকলেই একমত, লকডাউনের পুরো সময়ে বাগান বন্ধ থাকলে, আগামী অন্তত দুটো মরসুমে ভাল মানের চা পাতা মিলবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৮:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি

কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন থেকে ছাড় দিয়েছে। মালিকপক্ষ বারবার দাবি করছেন। আজ রাজ্য সরকার আলোচনায় বসছে। উত্তরের চা বাগানে ফের কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, দূরত্ববিধি মেনে চা বাগানে আদৌও কাজ করা সম্ভব হবে তো?

Advertisement

মালিক থেকে শ্রমিক, চা পর্ষদের কর্তা থেকে প্রশাসনের কর্তারা সকলেই একমত, লকডাউনের পুরো সময়ে বাগান বন্ধ থাকলে, আগামী অন্তত দুটো মরসুমে ভাল মানের চা পাতা মিলবে না। সেই ধাক্কায় বহু চা বাগান বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ, অর্ধেক সংখ্যক শ্রমিকদের একসঙ্গে কাজে যেতে দেওয়া হোক। বাকি অর্ধেক সে দিন ঘরবন্দি থাকুক। তা হলে জমায়েত এড়ানো যাবে। কেন্দ্রীয় সরকারকে এই প্রস্তাব পুর্নবিবেচনার অনুরোধ করেছেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্ত। সাংসদের আর্জি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য চা বাগান বন্ধই রাখা উচিত। একই আর্জি জানিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লাও। চা শ্রমিকদের ডান-বাম সংগঠনের যৌথ মঞ্চের নেতারাও বাগানে পুরোদমে কাজ না করার পক্ষপাতী।

তবে বাগান না খুললে জটিলতা যে বাড়বে, মালিকদের সঙ্গে তা নিয়ে একমত শ্রমিকনেতারাও।

Advertisement

তরাইয়ের চা শ্রমিক নেতা অলক চক্রবর্তীর কথায়, “২০১৭ সালে দার্জিলিঙে টানা বনধে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা এখনও পুরোপুরি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আরও দশদিন বাগান বন্ধ থাকলে গাছের অর্ধেক কেটে ফেলতে হবে। তাতে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হবে। সে কথা মাথায় রেখে, সাবধানতা বজায় রেখে বাগান খোলা হোক।”

তবে এক ডাক্তারের কথায়, “শহরের লোকেরাই দূরত্ববিধি ঠিকঠাক মানছেন না। চা বাগানের শ্রমিকরা, তা কতটা মানতে পারবেন?” চা পাতা ওজন করার সময়ে, কারখানায় ঢোকা বের হওয়ার সময়ে দূরত্ব কতটা বজায় থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে তিনি জানান।

গত কয়েকদিনে চা বাগানগুলিতে হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছেন। তাঁদের কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁদের থেকে, রোগ চা বাগানে যে থাবা বসায়নি সে নিশ্চয়তা স্বাস্থ্য দফতরও দিচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে চা বাগান খুললে, রোগ সংক্রমণ বহুগুণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবার বাগান বন্ধ থাকলে, শ্রমিক পরিবারগুলি নিদারুণ সঙ্কটে পড়েবেন। এই দুই আশঙ্কাকে সামাল দেওয়াই এখন প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ। কী ভাবে তা সামাল দেওয়া যেতে পারে, সেই পথের খোঁজ দেবে আজকের সভা।

এর মাঝে, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া ও তাঁদের লকডাউনে ‘অনুপস্থিত’ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে ওই সংস্থার তরফে তা অস্বীকার করেছে। সংস্থার এমডি অতুন আস্থানা রবিবার বলেন, ‘‘আমরা দায়িত্বশীল সংস্থা। সমস্ত বাগানেই, আমরা দেশের আইন মেনে কাজ করি।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement