—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সম্প্রতি শুরু হয়েছে বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলির জন্য উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিং। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেখানে অনুপস্থিতির হার এবং সুপারিশপত্র প্রত্যাখ্যানকরা প্রার্থীর সংখ্যা গত বছরের উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিংয়ের তুলনায় লক্ষণীয় ভাবে বেশি। চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, গত বছরও নভেম্বর মাসে উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিংহয়েছিল। যদিও কেউ সুপারিশপত্র পাননি। তার সঙ্গে এ বারের তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরে কাউন্সেলিংয়ের মাঝপথে যত জন প্রার্থী অনুপস্থিত, সেইসংখ্যা গত বারের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গিয়েছে।
গত ১১ নভেম্বর থেকে বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলির জন্য কাউন্সেলিং শুরু হয়েছে। তা চলবে আগামী ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ে মোট ৮০৯১ জনের কাউন্সেলিং হওয়ার কথা। শনিবার, অর্থাৎ ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত কাউন্সেলিং হয়েছে ৬৩৫২ জনের। তাঁদের মধ্যে এখনই অনুপস্থিত থাকা এবং সুপারিশপত্র প্রত্যাখ্যান করা, এই দু’টি মিলিয়ে প্রার্থীর সংখ্যা ১৫৯৮। অন্য দিকে, গত বছরের নভেম্বরে কাউন্সেলিং হয়েছিল ৮৯৪৫ জনের। তাঁদের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন ১০২৫ জন। চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, শনিবার পর্যন্ত ইতিমধ্যে বাংলা, ইংরেজি এবং বায়ো সায়েন্সের কাউন্সেলিং শেষ হয়েছে। এখন পিয়োর সায়েন্স এবং ইতিহাসের কাউন্সেলিং চলছে। এখনও প্রায় দু’হাজারের কাছাকাছি প্রার্থীর কাউন্সেলিং বাকি। তাঁদের ধারণা, পুরো কাউন্সেলিং-পর্ব মিটলে অনুপস্থিতির সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে।
প্রশ্ন উঠছে, এক বছরে অনুপস্থিতির হার এত বেড়ে গেল কেন? এসএসসি-র আধিকারিক এবং চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের মতে, অনেকে হয়তো গত এক বছরে অন্য সরকারি চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী জানান, কারও কারও প্রাথমিকে ১০ বছর চাকরি হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সেখানে যে বেতন পাচ্ছেন, সেই বেতন হয়তো তাঁরা উচ্চ প্রাথমিকে পাবেন না। অনেকে বাড়ির কাছে প্রাথমিকে চাকরি পেয়ে যাওয়ায় আর দূরে আসতে চাইছেন না। তাই উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিংয়ে ডাক পেয়েও হাজির হননি।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চ’-এর সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁরা ইতিমধ্যে অন্য কোথাও চাকরি করছেন, তাঁদের অনেকেই আগে জানিয়ে দিয়েছেন যে, কাউন্সেলিংয়ে আসবেন না। বরং তাঁরা চান, অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের সুযোগ বাড়ুক। এর ফলে আমাদের সুবিধা হচ্ছে। আমরা চাই, অপেক্ষমাণদের দ্রুত দ্বিতীয় কাউন্সেলিং শুরু করুক এসএসসি।’’
এসএসসি-র এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘দ্বিতীয় কাউন্সেলিং শুরু করার আগে শূন্য পদের সংখ্যা ভাল ভাবে হিসাব করে দেখা জরুরি। ধরা যাক, তফসিলি জাতির তালিকায় নাম থাকা কোনও মহিলা প্রার্থী সাধারণ মেধা তালিকায় (জেনারেল ক্যাটাগরি) স্থান পেলেন। তা হলে তিনি চারটি র্যাঙ্ক পাবেন। অর্থাৎ, ওই প্রার্থী কাউন্সেলিংয়ে না এলে চারটি শূন্য পদ তৈরি হবে। তিনি উপস্থিত হলে থাকবে তিনটি শূন্য পদ। একই রকম হিসাব আছে পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও। তাই সব খুঁটিনাটি হিসাব করেই শূন্য পদের সংখ্যা দেখে দ্বিতীয় কাউন্সেলিং শুরু হবে। ডিসেম্বরে তা শুরু করার চেষ্টা করা হবে।’’