রসদ: বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার গেট দিয়ে ‘জিরো পয়েন্টে’ থাকা জমির গম ট্রাক্টরে করে নিয়ে আসছেন কৃষকেরা। শনিবার মালদহের কালিয়াচক ৩ ব্লকের গোপালনগরে। নিজস্ব চিত্র
মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের কাঞ্চনতার থেকে কালিয়াচক ৩ ব্লকের সবদলপুর পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার গেট কৃষকদের ফসল কেটে, তুলে আনার জন্য খুলে দিল বিএসএফ। কৃষকদের বক্তব্য, তিন দিনের জন্য কাঁটাতারের ওপারে ‘জিরো পয়েন্টে’ থাকা গম কেটে নিয়ে আসার অনুমতি দিয়েছে বিএসএফ।
এ দিকে কাঁটাতারের বেড়ার গেট খুলতেই শনিবার সকাল থেকে কৃষকেরা জমিতে গম কাটার কাজ শুরু করে দেন। ট্রাক্টরে বোঝাই করে এপারে আসা হয় গম।
মালদহের বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত কয়েকশো বিঘা আবাদি জমি রয়েছে। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে গমের ঝলসা রোগের প্রকোপের জন্য গত চার বছর ধরে এ পারের কৃষকেরা কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে থাকা জমিতে গম চাষ করতে পারেননি। কৃষকদের দাবি, বিকল্প চাষ হিসেবে ডাল জাতীয় শস্য চাষ করে তাঁরা লাভের মুখ দেখেননি।
জানা গিয়েছে, এ বারে বাংলাদেশ সীমান্তে গম চাষে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় কৃষকেরা এপারের পাশাপাশি কাঁটাতারের বেড়ার ওপারেও গম চাষ করেন। কিন্তু কালিয়াচক ৩ ব্লকের গোপালনগর, ষষানি, চকমাইলপুর গ্রামের কৃষকদের অভিযোগ, শুক্রবার সকালে আচমকা কাঁটাতারের বেড়ার গেট ১০ দিনের জন্য বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে দেয় বিএসএফ। ফলে বিপাকে পড়েন কয়েকশো কৃষক। গোপালনগরের কৃষকরা ও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিষয়টি নিয়ে মালদহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের দ্বারস্থ হন। বিএসএফের কর্তাদেরও বিষয়টি জানানো হয়।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতেই মালদহের পুলিশ সুপার বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত এ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনটি নির্দিষ্ট সময়ে কৃষকদের জন্য কাঁটাতারের বেড়ার গেট খুলে দেয় বিএসএফ।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হারাধন রজক বলেন, ‘‘কাঁটাতারের বেড়ার গেট বন্ধ রাখলে কৃষকেরা ফসল ঘরে তুলতে পারতেন না। লকডাউন পরিস্থিতিতে ফসল জমিতেই নষ্ট হয়ে যেত। লুট হত। কিন্তু পুলিশ-বিএসএফ আলোচনায় সমস্যা মিটেছে।’’
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি জানার পরে শুক্রবারই বিএসএফের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কৃষকোরা যাতে ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল বিএসএফকে। এ দিন গেট নির্দিষ্ট সময়ে খুলেছে।’’
বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কৃষকদের অসুবিধা যাতে না হয় সে বিষয়টি আমরা দেখছি।’’