বেনিয়ম: ব্যারিকেড টপকে অবাধে যাতায়াত। শিলিগুড়ি পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কন্টেনমেন্ট জ়োনে। ছবি: বিনোদ দাস
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জোর দেন পরীক্ষা সংখ্যা বাড়ানোর উপরে। তিনি জানিয়েছিলেন, করোনা সংক্রমণ সামলাতে টেস্ট এবং ট্রেসিং খুবই জরুরি। সে কথা মাথায় রেখেই নমুনার পরিমাণ বাড়াতে চলেছে রাজ্য প্রশাসন। উত্তরবঙ্গও তার থেকে আলাদা নয়। সেই মতো উত্তরবঙ্গের মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলির পরীক্ষাগারে রোজ কতগুলি করে নমুনা পরীক্ষা করতে হবে, তার ন্যূনতম লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। সেই লক্ষ্যে এগোলে রাজ্য জাতীয় গড় দিনে ৫০ হাজার নমুনা পরীক্ষায় পৌঁছতে পারবে বলেই স্বাস্থ্য দফতরের আশা।
রাজ্যে নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার ভিডিয়ো কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা পরিকল্পনা নিয়েছে প্রতিদিন ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করানোর। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গের ল্যাবরেটরিগুলিকেও নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে বলা হয়েছে। কোচবিহারে ল্যাবরেটরি চালু হলেও সেখানে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরীক্ষা হচ্ছিল না। অনেক ক্ষেত্রে তারা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে লালারসের নমুনা পাঠাচ্ছিল। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন নির্দেশিকায় কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে প্রতিদিন ১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক ল্যাবরেটরিতে প্রতিদিন ১৮০০ নমুনা পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ১২০০ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এর আগে ৪ অগস্ট লালারসের পরীক্ষা বাড়ানোর জন্য এক দফায় নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। তখন রাজ্যে প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষা ২০ হাজার ৮০০ করানোর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এখন যে লক্ষ্য রয়েছে, তাতে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন অন্তত ৬০০, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে প্রতিদিন ১ হাজার পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে।
নমুনা পরীক্ষার জাতীয় গড় ছুঁতে প্রতিদিন ৫০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক ল্যাবের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই লক্ষ্যমাত্রার দিকেই রাজ্য এগোচ্ছে বলে তাদের ধারণা। তাতে প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানোর সম্ভবনাও রয়েছে।
বর্তমানে মালদহে প্রতিদিন গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। রায়গঞ্জে পরীক্ষা হচ্ছে ৪০০টির মতো। তাদের নমুনা পরীক্ষার হার বৃদ্ধি পেলে তা গৌড়বঙ্গে করোনা সংক্রমণ রোখার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট কাজে আসবে বলে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের অনেকেই মনে করছেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে মালদহে এখন নমুনা পাঠানো হয়। সেই মতো তাদের প্রতিদিন ৪০০ নমুনা পাঠাতে বলা হয়েছে। এবং আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নমুনা পাঠায়। তাদের প্রতিদিন ৫০০, ৫০০ এবং ২০০টি করে নমুনা পাঠাতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের কেউ কেউ বলছেন, নমুনা পরীক্ষা বাড়িয়েই অনেক জায়গায় সাফল্য এসেছে। এ বারে রাজ্যও সেই লক্ষ্যে গতি বাড়াতে চাইছে। সেটা খুবই আশার কথা।