—ফাইল চিত্র।
জলপাইগুড়ি শহরের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিম্নমুখী। ১১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত শহরের আক্রান্ত সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে চার'শো। চলতি মাসের ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দেড়'শো পাড় হয়নি বলে দাবি। তবে বড়দিন ও বর্ষবরণের উৎসবে সকলকে সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আবেদন পুর কর্তৃপক্ষের। শীতের দেশ গুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। অন্যদিকে শহরে আক্রান্তের সংখ্যা কম হওয়ার স্বস্তি পুর কর্তৃপক্ষের।
জলপাইগুড়ি জেলাতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩,৯৩৬ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৩,৩২৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৫৩ জনের। নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে আক্রান্তের সংখ্যা যথেষ্ট কমেছে জেলাতে বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। এদিকে জলপাইগুড়ি পুর এলাকায় ২৫টি ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা সতেরো'শো ছাড়িয়েছে। শহরে করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে ২৬ জন বাসিন্দা। স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্যে উঠে এসেছে গতমাসের তুলনায় এমাসে ৫০ শতাংশের বেশি আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, শহরে লাগাতার জীবাণুমুক্তের কাজ চলছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ আগের থেকে অনেক সচেতন হয়েছেন। এই কারণে ধীরে ধীরে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। নভেম্বর মাসে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ জন আক্রান্ত হয়। চলতি মাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন গড়ে ৫-৭ জন হয়। এই কারণে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ বলে দাবি। সোমবার করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র একজন বলে দাবি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। আক্রান্তের বাড়ি ও এলাকা জীবাণুমুক্ত করে কনটেনমেন্ট জোন করা হয়েছে। সামনে বড় দিন ও বর্ষবরণের উৎসব রয়েছে তা নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। ভিড় ও সামাজিক দুরত্ব সকলকে মানতে হবে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, করোনা ভাইরাস দুবল হতে শুরু করেছে। অনেকের দেহে করোনা ভাইরাস 'সুপার স্পেডার' মত কাজ করত কয়েক মাস আগে। তাঁদের ভাইরাল লোড বেশি থাকায় দ্রুততার সঙ্গে সংক্রমণ ছড়াতো। এই মুহূর্তে এই ধরণের আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন," সাধারণ মানুষ সচেতন হয়েছেন এই কারণে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। তবে আমরা চিকিৎসা ব্যবস্থা জোর দিয়েছে। এই কারণে ৪২ সিসিইউ চালু করা হয়েছে নতুন করে। করোনা দ্বিতীয় ধাপে একটা ভাইরাসের কথা বলা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে এখনো পর্যন্ত এই ধরণের কোন ভাইরাস পাওয়া যায়নি। আমরা সর্তক রয়েছি।" পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য সন্দীপ মাহাতো বলেন, ‘‘আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। আমরা কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে। তবে সকলের কাছে অনুরোধ বড়দিন ও বর্ষবরণের উৎসবে সকলে যেন স্বাস্থ্যবিধি নেমে চলেন।"
করোনা আক্রান্ত হয়ে ফের শিলিগুড়িতে দুই রোগীর মৃত্যু হল গত ২৪ ঘণ্টায়। দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সোমবার সকালে মাটিগাড়া কোভিড হাসপাতালে মারা যান প্রায় সত্তর বছরের এক বৃদ্ধ। তাঁর বাড়ি শিলিগুড়ির সুভাষপল্লি এলাকায়। গত ২১ ডিসেম্বর থেকে করোনা ছাড়াও নানা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন। কাওয়াখালি কোভিড হাসপাতালে এদিন দুপুরে দার্জিলিংয়ের আরও এক বাসিন্দা মারা যান। গত ২০ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে তাঁকে রেফার করা হয়েছিল বলে জানান চিকিৎসকরা। তাঁর বয়েস হয়েছিল ৪২ বছর। সোমবার দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি একটি তথ্য প্রকাশ করে জানান, শেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা জেলায় ছিল ২৫ জন। শিলিগুড়়িতে আক্রান্ত ছিলেন মোট ২৪ জন। রবিবার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতাল এবং আইসোলেশন কেন্দ্র থেকে মোট ৩৭ জন সুস্থ হয়েছেন বলে জানান জেলার কর্তারা।