করোনা আক্রান্ত চিকিসকের চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতালের দাবি উঠেছে। ফাইল চিত্র।
মালদহে একের পর এক চিকিৎসক করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়েই স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে চান তাঁরা— মালদহ মেডিক্যাল ও গ্রামীণ হাসপাতালগুলির চিকিৎসকেরা এমনই বলছেন।
শুধু তাই নয়, করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরে কয়েক জন চিকিৎসক ফের হাসপাতালে কাজেও ফিরেছেন। তবে তাঁদের একাংশের দাবি, কোনও চিকিৎসক যদি করোনা আক্রান্ত হন, তাঁর চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতাল থাকা উচিত। সরকারের এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা দরকার। গ্রামীণ হাসপাতালগুলির কয়েক জন চিকিৎসক পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের অপ্রতুলতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এখনও পর্যন্ত মালদহ মেডিক্যাল এবং গ্রামীণ হাসপাতাল মিলিয়ে প্রায় ১৬ জন ডাক্তার আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী, উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ১ মৃগাঙ্কমৌলি কর, উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ২ অমিতাভ মণ্ডলও আক্রান্ত হয়েছিলেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ১ সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন।
ভূষণ বলেন, ‘‘কোনও চিকিৎসক আক্রান্ত হলে বা কারও মৃত্যুতে আমাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায় এটা ঠিক। কিন্তু উপায় নেই। সুরক্ষা ঠিকঠাক রেখে স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজ আমাদের চালিয়ে যেতেই হবে। তবে প্রথম দিকে সংক্রমণ নিয়ে যে ভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তাম, এখন মৃত্যুহার অনেকটা কম থাকায় সেই চিন্তা অনেকটাই কমেছে।’’
মালদহ মেডিক্যালে করোনার চিকিৎসার দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যতম চিকিৎসক পীযূষকান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘কাজ করতে গেলে হোঁচট খেতে হবে। চিকিৎসকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন, কয়েক জন মারাও গিয়েছেন। এই বিষয়টিকে মেনে নিয়েই আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। তবে কোনও চিকিৎসক আক্রান্ত হলে তাঁর চিকিৎসায় আলাদা হাসপাতাল থাকা দরকার।’’
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি চিকিৎসক খুরশিদ পারভেজ বলেন, ‘‘পিপিই কিট এবং মাস্ক যদি ঠিকঠাক ভাবে পরা থাকে, তবে ঝুঁকি অনেকটাই কম। তার মধ্যেও সামান্য অসাবধানতায় হয়তো চিকিৎসকেরা আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তবুও আমরা রোগীদের পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর।"
বামনগোলা ব্লকের এক হাসপাতালের চিকিৎসক সৌগত রহমান বলেন, ‘‘কোভিড হাসপাতালে যখন চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলাম তখন ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেছি। টানা সাত দিন কাজ করতে হয়েছে। ফের গ্রামীণ হাসপাতালে আসতে হয়েছে। এখানে পিপিই কিট বা মাস্কের জোগান কম। ঝুঁকি নিয়েই পরিষেবা দিতে হচ্ছে।’’