প্রতীকী ছবি।
করোনার সারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অস্থায়ী বাসস্থান চিলাপাতা রিসর্টে কাজ করেন তাঁরা। অভিযোগ, ওই প্রায় দিনই বাড়ি ফিরতে গিয়ে তাঁরা বাধার মুখে পড়ছেন। এমনকি, পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়ে ওই কর্মীদের কেউ কেউ বাড়ি ফেরাই বন্ধ করে দিয়েছেন।
সম্প্রতি তপসিখাতার আয়ুষ হাসপাতালকে করোনার সারি হাসপাতাল হিসাবে চালু করা হয়। এখানকার ২৮০ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অস্থায়ী ভাবে থাকার জন্য চিলাপাতার চারটি রিসর্ট নেয় প্রশাসন। কিন্তু ওই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তাঁদের এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে রিসর্টগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন এলাকার গ্রামবাসীরা। পরে তাদের বুঝিয়ে চিকিত্সকদের থাকার ব্যবস্থা হলেও রিসর্টগুলো থেকে রাঁধুনীরা পালিয়ে যেতে শুরু করেন। এখন রিসর্টগুলিতে প্রায় চল্লিশজন কাজ করেন। যাঁদের অনেকের বাড়ি আশপাশের এলাকাতেই। অভিযোগ, ওই রিসর্টে কাজ করায় অনেকেই এখন বাড়ি ফিরতে সমস্যার মুখে পড়ছেন।
চিলাপাতার ওই রিসর্টগুলোর একটির মালিক গণেশকুমার শা বলেন, “বারবার বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়ে আমার রিসর্টের এক কর্মী বাড়ি ফেরাই বন্ধ করে দিয়েছেন। একই কারণে আমার রিসর্টে সাফাইকর্মী আসাও বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে আমার এখানে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিজেদেরকেই ঝাড়ু দিয়ে ঘর সাফাই করতে হচ্ছে।”
আলিপুরদুয়ারের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “এটা একটা সামাজিক সমস্যা। আমরা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
এদিকে, এই লকডাউনের মধ্যেই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের কোয়ার্টার ছাড়তে রেলের নির্দেশ ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধল আলিপুরদুয়ারে। অভিযোগ, সম্প্রতি শতাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে কোয়ার্টার ছাড়ার নোটিস ধরান রেলকর্তারা। লকডাউন চলাকালীন কেন এই নোটিস, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার আলিপুরদুয়ার জংশনে রেলের ডিআরএম দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। রেলকর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, নোটিস দেওয়া হলেও বলপ্রয়োগের আগে সমস্ত পরিস্থিতি যাচাই করে দেখা হবে।
আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকায় প্রায় তিন হাজার কোয়ার্টার রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় দেড় হাজার কোয়ার্টার এই মুহূর্তে চালু। রেল সূত্রের খবর, কোনও কর্মী অবসর নেওয়ার পর চার মাস পর্যন্ত কোয়ার্টার ব্যবহার করতে পারেন। তারপর আবার আবেদন করলে আরও চারমাস কোয়ার্টারকে থাকতে পারেন তাঁরা।
রেলকর্তাদের অভিযোগ, বহু আগে ওই সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও অনেকেই কোয়ার্টার ছাড়ছেন না। সম্প্রতি এমনই প্রায় ১২৫ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে কোয়ার্টার ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, “নোটিস দেওয়া মানেই কারও উপর বলপ্রয়োগ করা নয়। বলপ্রয়োগের প্রয়োজন হলে অবশ্য সেই সময়ের যাবতীয় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তারপর তা করা হবে।”