প্রতীকী ছবি
করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নার্সের শিশু সন্তানের শরীরেও করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ল। বুধবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তা জানানো হয়। ওই নার্সের স্বামী এবং পরিবারের আর এক সদস্য আগেই আক্রান্ত হয়েছেন। সকলেই শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া যে আবাসনে তাঁরা থাকেন, সেটি এবং লাগোয়া কলমজোত এলাকা ‘কনটেনমেন্ট জ়োন’। তবে সেই মতো কড়াকড়ি নেই বলে অভিযোগ। তাতে এলাকায় লোকজন আনায়াসে আনাগোনা করছে বলেও স্থানীয়দের দাবি।
১৩ এপ্রিল ওই নার্সের শরীরে করোনার সংক্রমণ মেলার পর দিন তাঁর স্বামীর শরীরেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। সে সময় তাঁদের শিশু সন্তান কোয়রান্টিনে দিদিমার কাছে থাকত। কিন্তু দিদিমার শরীরেও একদিন পর সংক্রমণ পেলে শিশুটিকে রাখার জায়গার অভাবে পরিবারের লোকের সঙ্গে কোভিড হাসপাতালেই রাখা হচ্ছিল। এ ছাড়া করোনা আক্রান্ত আরও এক নার্সও ওই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এদিন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, শিলিগুড়়ি পুর কমিশনার, পুরসচিব, জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার এবং জেলা প্রশাসনের অন্য শীর্ষ প্রতিনিধিদের নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বৈঠক করেন করোনা প্রতিরোধে উত্তরবঙ্গে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত রায়। কোথায় কী ভাবে কাজ হচ্ছে, আর কী কী করলে ভাল হয়, তা নিয়েও আলোচনা হয়। আন্তঃরাজ্য, আন্তঃজেলা গাড়ি চলাচল, মানুষ যাতায়াতের ক্ষেত্রে ‘হেল্থপোস্ট’ বসিয়ে নজরদারি ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেন সুশান্তবাবু। পুরসভার ৪১ এবং ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড, মেডিক্যালের নিকটবর্তী আবাসনের মতো ‘কনটেনমেন্ট’ এলাকা এবং লাগোয়া অংশে কী ভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ করতে হবে, তা-ও বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
সুশান্তবাবু পরে বলেন, ‘‘পুলিশকে জানানো হয়েছে আন্তঃরাজ্য বা আন্তঃজেলা চেকপোস্টগুলিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে। গাড়ির নথিপত্র পরীক্ষা করে ছাড়া হচ্ছে। শুধু সেটা করলে হবে না। গাড়ির চালক বা তাতে থাকা লোকজনদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে বলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো হয়েছে। গাড়ি স্যানিটাইজ় করতে হবে। যাঁরা ঢুকছেন, তাঁদের সরকারি দফতরের ‘সিল’ দেওয়া নথি তৈরি করে তবেই ছাড়া হবে।’’
এ দিনের বৈঠকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং বেসরকারি ফিভার ক্লিনিকগুলিকেও আরও শক্তিশালী করতে বলা হয়েছে। বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে যে কোনও জ্বরের রোগীকে করোনা সন্দেহে পাঠানো নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। সে কারণে একটা ‘গাইড লাইন’ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ১৩৪টি পরীক্ষা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভাইরোলজির ল্যাবরেটরিতে। সবই নেগেটিভ এসেছে। প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে ২৫০-২৭০ করতে বলা হয়েছে। ওই কাজের জন্য নতুন যন্ত্র আনা হচ্ছে। তাতে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়বে বলেই আশাবাদী কর্তৃপক্ষ। কাওয়াখালিতে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (সারি) কেন্দ্রে ৭ জনের শরীরে কিছু না-মেলায় এদিন তাঁদেরছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ৭ জন ভর্তি রয়েছেন।