প্রতীকী ছবি
এক দিনে রেকর্ড সংখ্যক করোনাভাইরাস সংক্রমণের হদিশ মিলল মালদহে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত পর্যন্ত ৩১ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। আরও চিন্তার বিষয় হল, এদের কারও কোনও বাহ্যিক উপসর্গ ছিল না। তার মধ্যে শুধু ইংরেজবাজার ব্লকেই আক্রান্ত হয়েছেন ২০ জন। এ ছাড়া কালিয়াচক ১ ব্লকে ৬ জন, কালিয়াচক ২ ও চাঁচল ২ ব্লকে দু’জন করে এবং মানিকচকে একজন আক্রান্ত হয়েছেন। সূত্রের খবর, আক্রান্তদের মধ্যে বেশ কিছু জন সরকারি কোয়রান্টিনে ও বাকিরা বাড়িতে হোম কোয়রান্টিনে ছিলেন। জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এ নিয়ে হল ৮৭ জন।
এ ভাবে একসঙ্গে ৩১ জন আক্রান্ত হওয়ায় গোষ্ঠী সংক্রমণও শুরু হল কি না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। যদিও স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, মহারাষ্ট্রে এই পরিযায়ী শ্রমিকরা হয়ত একসঙ্গে কাজ করতেন বা বাড়ি ফেরার সময় একসঙ্গে এসেছেন। তাই হয়ত তাঁরা একসঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়, ইংরেজবাজারের আক্রান্ত ২০ জনের মধ্যে মিলকি পঞ্চায়েতেরই ১২ জন। এঁরা প্রত্যেকেই নির্মাণ শ্রমিক এবং তাঁদের ৮ জনের বাড়ি আটগামা এলাকায়, তিন জনের মিলকি সদরে ও একজনের ভবানীপুরে। অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে ট্রাকে করে তাঁরা মহারাষ্ট্রের বান্দ্রা থেকে ১৪ তারিখ জেলায় ফেরেন। ১২ জনের মধ্যে ৮ জন সরকারি কোয়রান্টিনে ছিলেন, বাকি চারজন ছিলেন বাড়িতে। এ দিন তাঁদের মালদহের নারায়ণপুর বাইপাসের জেলা কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ব্লকের বিনোদপুর পঞ্চায়েতের সাট্টারির তিনজনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে, তাঁরাও ট্রাকেই মুম্বই থেকে ফিরেছিলেন এবং সরকারি কোয়রান্টিনে ছিলেন। তাঁদেরও কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ব্লকের বাকি দু’জন করে আক্রান্ত যথাক্রমে কাজিগ্রাম ও নরহাট্টা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। আর একজন ফুলবাড়িয়া পঞ্চায়েতের। তাঁদেরও এদিন কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কালিয়াচক ১ ব্লকের ৬ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। আক্রান্তদের তিন জনের বাড়ি কাশিমনগর, জগদীশপুর, উত্তর দারিয়াপুরে। কাশিমনগরের আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে খবর, বছর তিরিশের আক্রান্ত ওই ব্যক্তিও ১৪ তারিখ অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে ট্রাকে বান্দ্রা থেকে ফেরেন। মালদহের গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাসে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তারপর তিন দিন কাশিমনগর প্রাইমারি স্কুলে সরকারি কোয়রান্টিনে থাকার পর বাড়িতেই ছিলেন। কালিয়াচক ২ ব্লকের যে দু’জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে, তাঁরা মোথাবাড়ির পটলডাঙ্গা ও মুন্সিটোলার বাসিন্দা। মহারাষ্ট্রে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কর্মরত এই বাসিন্দারাও মহারাষ্ট্র থেকে ফেরেন।
চাঁচল ২ ব্লকের আক্রান্ত দু’জন যথাক্রমে অনুপনগর ও জালালপুরের বাসিন্দা। তাঁরাও মুম্বই থেকে ফিরেছেন। এ দিন তাঁদের আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। মানিকচকের চৌকিমিরদাদপুর পঞ্চায়েতেও এক বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে আইসোলেশন সেন্টারে রাখা হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুক্রবার নতুন করে জেলায় ৩১ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘আক্রান্তদের গ্রামগুলি বাঁশের ব্যারিকেডে ঘেরা হয়েছে। এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।’’