প্রতীকী ছবি।
একদিনে করোনা সংক্রমণ নিয়ে দশ জনের মৃত্যু হল শিলিগুড়িতে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মারা যান তাঁরা। মৃতদের মধ্যে চার জন শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দা। একজন শিলিগুড়ির বাগডোগরা এলাকার। বাকিদের মধ্যে কোচবিহারের ২ জন, ইসলামপুর, মালবাজার, কিসানগঞ্জের ১ জন করে বাসিন্দা রয়েছেন। শিলিগুড়িতে করোনার সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু ক্রমেই বেড়ে চলায় চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে মারা যান শিলিগুড়ির ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৪৫ বছরের এক মহিলা। করোনার সংক্রমণ নিয়ে তাঁকে ১১ অগস্ট সেখানে ভর্তি করানো হয়েছিল। এ দিন ভোরে ওই হাসপাতালেই মারা যান ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৪৫ বছরের এক মহিলা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ তাঁকে করোনার সংক্রমণ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তনগরের বাসিন্দা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসক তাঁকে দেখে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যুর পর তাঁর লালারস পরীক্ষা রিপোর্টে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। এ দিন মাটিগাড়া কোভিড হাসপাতালে মারা যান শিলিগুড়ি শহরের চিলড্রেনপার্ক এলাকার বসিন্দা ৫০ বছরের এক ব্যক্তি।
শিলিগুড়ির বাগডোগরার সূর্যনগর এলাকার বাসিন্দা ৮০ বছরের এক ব্যক্তি করোনার সংক্রমণ নিয়ে শুক্রবার বিকেলে কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে মারা যান।
কোচবিহারের যে দু’জন শিলিগুড়িতে কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে মারা গিয়েছেন তাঁদের মধ্যে ৬৫ বছরের এক ব্যক্তি রয়েছেন। তিনি ঘুঘুমারি এলাকার বাসিন্দা। তাঁকে কোচবিহার কোভিড হাসপাতাল থেকে ১১ অগস্ট এই কোভিড হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। এ দিন বেলা সাড়ে ১০ টা নাগাদ তিনি মারা যান। ওই হাসপাতালেই মারা গিয়েছেন কোচবিহারের মাথাভাঙার নয়ারহাটের এক বাসিন্দা। বয়স ৮৬ বছর। ইসলামপুরের মিলনপল্লি এলাকার বাসিন্দা ৬২ বছরের এক ব্যক্তি এ দিন ভোরে মারা যান কাওয়াখালির কোভিডে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছিল। করোনার সংক্রমণ মিললে ১০ অগস্ট কোভিডে পাঠানো হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে মাটিগাড়া কোভিড হাসপাতালে মারা যান মালবাজারের ওদলাবাড়ির ৭৯ বছরের এক ব্যক্তি। এ দিন ভোরে ওই হাসপাতালেই মারা গিয়েছেন কিসানগঞ্জের বাসিন্দা ৫০ বছরের এক ব্যক্তি। এ দিনই বিকেলে এখানে ইসলামপুরের বাসিন্দা ৫০ বছরের এক ব্যক্তি মারা যান।
কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে মৃত্যু বৃদ্ধি নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছিল। পরে সুপার স্পেশালিটি টিম গড়ে, আইসিইউ’তে ইনচার্জ নিয়োগ করে পরিষেবার মান বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। তা কতটা কাজে আসছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা অবশ্য এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
শিলিগুড়ি পুর এলাকায় শুক্রবার ৩৫ জনের করোনা সংক্রমণ মিলেছে। পুর এলাকা বাদে শিলিগুড়ি মহকুমা এবং পাহাড় মিলিয়ে দার্জিলিং জেলায় আরও ৩১ জনের শরীরে নতুন করে সংক্রমণ ঘটেছে বলে রিপোর্ট এসেছে। তার মধ্যে ১৭ জন মাটিগাড়ার, ৮ জন নকশালবাড়ির, ২ জন ফাঁসিদেওয়ার, ৩ জন সুকনার এবং ১ জন সুখিয়াপোখরির বাসিন্দা রয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)