ফাইল চিত্র
করকোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আলিপুরদুয়ার জেলার প্রতিটি চা বাগানে স্বীকৃত চিকিৎসকের (কোয়ালিফায়েড মেডিক্যাল অফিসার) ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর। শুক্রবার জেলার প্রতিটি চা বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে এই নির্দেশ পাঠান হয়। ওই নির্দেশে একই সঙ্গে কর্মসূত্রে চা বাগান এলাকা থেকে ভিন রাজ্যে যাওয়া মানুষের তালিকা তৈরির পাশাপাশি তাঁরা ফিরলে সঙ্গে সঙ্গে সেই তথ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানাতে বলা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার জেলায় মোট ৬৪টি চা বাগান রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, অনেক চা বাগানের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর অবস্থা একেবারেই নড়বড়ে। সাতটি চা বাগান বাদ দিয়ে কোন বাগানে স্বীকৃত চিকিৎসক নেই। ফলে অনেক বাগানই চিকিৎসা চলছে হাতুড়েদের সাহায্যে। অনেকে বাগানে হাসপাতালও নেই বলে অভিযোগ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিভিন্ন চা বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বাগানগুলি থেকে একজন নোডাল পার্সনের নাম ও ফোন নম্বর চাওয়া হয়েছিল। তাঁদের কাজই হবে সেই বাগানের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়মিত জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। কিন্তু অভিযোগ, অর্ধেকের বেশি বাগান সেই নোডাল পার্সনের নাম দেয়নি। বৃহস্পতিবার ডুয়ার্সকন্যায় আয়োজিত একটি বৈঠকে যা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা। এর পরই করোনার কথা মাথায় রেখে শুক্রবার প্রতিটি বাগানে স্বীকৃত ডাক্তাদের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আলিপুরদুয়ারের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্ল্যানটেশন লেবার অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রত্যেক চা বাগানেই স্বীকৃত চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু আলিপুরদুয়ার জেলার বেশিরভাগ চা বাগানেই স্বীকৃত চিকিৎসক নেই। সে জন্যই এদিনের এই নির্দেশ।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের নির্দেশে চা বাগানগুলিকে স্বীকৃত চিকিৎসকের পাশাপাশি স্বীকৃত স্বাস্থ্য কর্মীর ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে।
সারা বছরই চা বাগান এলাকার প্রচুর মানুষ কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে যান। তাঁদের অনেকেই এই মুহূর্তে বাড়ি ফিরে আসছেন। কিন্তু অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতর তাঁদের কথা জানতেই পারছে না। এই অবস্থায় কোন চা বাগান থেকে কারা বাইরে গিয়েছেন, তার তালিকা তৈরির পাশাপাশি তাঁরা বাড়ি ফিরলেই সেই তথ্য তাঁদের জানাতে বাগান কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
স্বাস্থ্য দফতর সব চা বাগানে স্বীকৃত চিকিৎসকের ব্যবস্থার কথা বললেও এতো চিকিৎসক কোথায় পাওয়া যাবে, তা নিয়েই এখন চিন্তায় বিভিন্ন চা বাগানের কর্তারা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির জেরে সে বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি নন তাঁরা। টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার উত্তরবঙ্গের সচিব রামঅবতার শর্মা বলেন, ‘‘প্রত্যেক চা বাগানে স্বীকৃত চিকিৎসকের ব্যবস্থার কথা আইনে বলা রয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশ সব বাগানকেই অবশ্য পালন করতে হবে।’’