মোকাবিলা: মঙ্গলবার লকডাউন চলাকালীন সরকারি বিধি ভেঙে রাস্তায় বেরোনয় আলিপুরদুয়ারে এক সাইকেল আরোহীকে লাঠি পুলিশের। ছবি: নারায়ণ দে
করোনা মোকাবিলায় কোচবিহারে শুরু হয়েছে লাঠৌষধি।
সোমবার থেকে লকডাউন ঘোষণার পরেও সাধারণ মানুষের অনেকেই তা ঠিক ভাবে মেনে চলছেন না। শহরে ভিড় করে যত্রতত্র আড্ডা চলছেই। তা বন্ধ করতেই শুরু হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের এই দাওয়াই। শহর জুড়ে এখন মুখে মুখে ঘুরছে ওই লাঠৌষধির কথা। সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশের ওই কাজকে সমর্থনও করছেন বাসিন্দারা। এতে অবশ্য অনেকটাই কাজ হয়েছে। দুপুরের পর থেকে প্রায় জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে শহর। পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “আইন মেনে সব জায়গায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
সোমবার সন্ধে থেকেই লকডাউন শুরু হয়ে যায়। সেই সময় থেকেই মাঠে নামে পুলিশ। চারপাশ থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ আসতে শুরু কর, জমায়েত করে কোথাও আড্ডা চলছে, কোথাও তাসের আসর বসেছে, কোথাও মদ্যপানের। পুলিশের টহলদারি ভ্যান ঘুরে বেড়ায় চারদিকে। সঙ্গে চলতে থাকে লাঠিচার্জ। মঙ্গলবার সকালেও একই ছবি দেখা যায় শহরের বিভিন্ন জায়গায়। কোনও কারণ ছাড়াই বাইক-গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় অনেককে। দুই-এক জায়গায় আড্ডাও শুরু হয়ে যায়।
সকালেই রাস্তায় নামেন কোচবিহারের মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল, ট্র্যাফিক ডিএসপি চন্দন দাস, কোতোয়ালি থানার আইসি সৌম্যজিৎ রায়, এসআই মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী এবং ডিএসপি সমীর পাল। সুনীতি রোড, ভবানীগঞ্জ বাজার থেকে শুরু করে শহরের অলি-গলি ঘুরে বেড়ান তাঁরা। সঙ্গে চলতে থাকে লাঠিচার্জ। বাইক বা গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরে কোনও সদুত্তর না পেলেই শুরু ‘ওষুধ’। পুলিশ-প্রশাসনের ওই অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়তেই ফাঁকা হতে শুরু করে বিভিন্ন এলাকা। কোতোয়ালি থানার আইসি সৌম্যজিৎ বলেন, “মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। করোনাভাইরাসে মানুষের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সেই বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করতে হচ্ছে। সচেতনতার জন্য নানা উপায় নেওয়া হচ্ছে।”
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ দূরত্ব রেখে চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়। তার পরেও কাজ না হওয়ায় লকডাউন ঘোষণা করে সবাইকে নিজের নিজের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। তার পরেও একটি অংশের বাসিন্দা প্রশাসন , পুলিশের পরামর্শ উপেক্ষা করে নিজের মতো রাস্তায় চলাচল করতে থাকেন। এর পরেই কড়া ব্যবস্থা নিতে শুরু করে পুলিশ।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “করোনাভাইরাসের টিকা এখনও আবিষ্কার হয়নি। এর একমাত্র ওষুধ ঘরে থাকা। অনেকেই তা মানছেন না। সেইজন্যই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।”