সংঘর্ষে আহত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। —নিজস্ব চিত্র।
আবাস যোজনার সমীক্ষা নিয়ে কোচবিহারে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নেতা-কর্মীদের ‘মাতব্বরি’ করতে নিষেধ করা হয়েছে বার বার। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, ‘‘সরকারি সমীক্ষার কাজে কারও হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়। এটা সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তার মধ্যেই, সমীক্ষা চলাকালীন দিনহাটার গিতালদহে দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল দলেরই এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার ওই ঘটনা ঘটেছে দিনহাটা ১ ব্লকের সীমান্ত গ্রাম গিতালদহের কোনামুক্তায়। আহতদের মধ্যে এক জন দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জখম তৃণমূল কর্মী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘‘এ দিন সকালে কোনামুক্তায় ৬/২৯৯ নম্বর বুথে আবাস যোজনার সমীক্ষা চলছিল। আবাস যোজনা প্রকল্পে নিজেদের নাম রয়েছে কি না, সে বিষয়ে জানতে আমি ও আতিকুল রহমান নামে আর এক জন সেখানে গেলে, পঞ্চায়েত সদস্যা রৌশনা খাতুনের স্বামী তৈয়ব আলি ও তার লোকজন মিলে চড়াও হয়। আমাদের আটকে রাখে ও মারধর করে।’’ ওই তৃণমূল কর্মী জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রৌশনা খাতুন নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। পরে তৃণমূলে যোগদান করেন। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী, অভিযুক্ত তৈয়ব আলির মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। গিতালদহ ১ অঞ্চল তৃণমূল নেতা রাজেশ কালোয়ার যদিও বলেন, ‘‘এ রকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি।’’
মঙ্গলবার আবাস প্রকল্পের সমীক্ষার বিষয়ে বৈঠক হয়েছে মহকুমাশাসকের (কোচবিহার সদর) দফতরে। এ দিন ওই বৈঠকে মহকুমাশাসক কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দু’টি ব্লকের বিডিও ও প্রশাসনের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মহকুমাশাসক জানান, আবাস তালিকা নিয়ে সমীক্ষা করে উপভোক্তা তালিকায় নথিভুক্ত বাসিন্দাদের বাড়ি দেখা হবে।
প্রশাসনের পাশাপাশি, আবাস প্রকল্পে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে পুলিশও। হলদিবাড়ি ব্লকে ১৬,৯৭৮টি বাড়িতে সমীক্ষা করবে প্রশাসন। ছটি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ৪৭টি দল গড়ে এই কাজ শুরু হয়েছে। ওই কাজে ‘সুপার চেকিং’-এর জন্য নামানো হয়েছে পুলিশকে। মঙ্গলবার হলদিবাড়ি থানার আইসি কাশ্যপ রাইয়ের নেতৃত্বে পুলিশকর্মীরা হলদিবাড়ি ব্লকের দেওয়ানগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সমীক্ষা করেন। এই কাজের জন্য হলদিবাড়ি বিডিও অফিসে কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।