প্রতীকী ছবি
গুজবে ঘিরেছে বাজার। ব্রয়লার মুরগি এড়াচ্ছেন অনেকে। করোনা-ভয়ে সেই মুরগির দাম এক লাফে ১৮০ থেকে একেবারে ৮০-১০০ টাকা প্রতি কেজিতে নেমেছে। তা-ও কার্যত মাছি তাড়াচ্ছেন দোকানিরা।
অভিযোগ, সেই সুযোগে মালদহের বাজারে লাগামছাড়া দাম খাসির মাংস, দেশি মুরগি, মাছেরও। নাজেহাল ক্রেতারা।
রবিবার মকদুমপুর বাজার থেকে রথবাড়ি বাজার— সব জায়গায় প্রতি কিলোগ্রাম খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে সাড়ে সাতশো টাকায়। দেশি মুরগির দর ছিল কেজিতে সাড়ে চারশো টাকা। ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, করোনাভাইরাস ঘিরে ছড়ানো জল্পনার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পরিকল্পিত ভাবে এ সবের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রুখতে প্রশাসনিক ‘টাস্ক ফোর্স’ বা পুরসভা নির্বিকার বলে অভিযোগ।
মালদহের ইংরেজবাজারের মকদুমপুর, রথবাড়ি, ঝলঝলিয়া বা চিত্তরঞ্জন মার্কেটে আলোচনা— সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমে যতই সচেতনতা প্রচার চলুক না কেন, করোনাভাইরাসের ভয়ে ব্রয়লার মুরগি এড়াচ্ছেন অনেকে। রবিবার মকদুমপুর বাজারে দেখা গেল, ব্রয়লার মুরগির দোকানগুলি খাঁ খাঁ করছে। এক বিক্রেতা বঙ্কিম কর্মকার বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে প্রচার চলছে ব্রয়লার মুরগির মাংস খাওয়া নিরাপদ। আমরাও সে কথা সবাইকে বলছি। কিন্তু তবুও মাংস বিক্রি হচ্ছে না।’’
সেই মকদুমপুর বাজারেই ভিড় খাসি ও দেশি মুরগির দোকানগুলিতে। মাছের বাজারও জমজমাট। কিন্তু খাসি, দেশি মুরগির মাংস বা মাছ কিনতে গিয়ে হাত পুড়ছে গৃহস্থের। বাজারে আসা সিঙ্গাতলার বাসিন্দা কৌশিক সরকার বলেন, ‘‘গত সপ্তাহেই দোলের সময় ৭০০ টাকা দরে খাসির মাংস এই বাজার থেকেই কিনেছিলাম। এ দিন তা সাড়ে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের একাংশ এ ভাবে দাম বাড়িয়ে ফায়দা লুটছেন।
জেলার বিভিন্ন বাজারে আসা একাধিক ক্রেতার অভিযোগ, করোনাভাইরাসের সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী খাসি ও মুরগির মাংস এবং মাছের দাম চড়িয়ে দিলেও তা নিয়ে নির্বিকার পুরসভা বা প্রশাসন। বাজারে এখন টাস্ক ফোর্সেরও দেখা মিলছে না।
দেশি মুরগির মাংস বিক্রেতা ঝণ্টু ইসলাম বলেন, ‘‘পাকুয়াহাট, আটমাইলহাট, কেন্দপুকুর হাটেই দেশি মুরগির দাম বেড়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়েই কিছুটা লাভ রেখে এমন দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’’ হাটে খাসির দাম বেড়ে গিয়েছে বলেও দাবি মাংস বিক্রেতাদের।
ইংরেজবাজারের পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’ প্রশাসনিক টাস্ক ফোর্সের সদস্য তথা মালদহ সদর মহকুমাশাসক সুরেশচন্দ্র রানো বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’