নকল কিট! নজর স্বাস্থ্য দফতরের

শহরের বেশ কিছু প্যাথোলজি পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্মীরা জানাচ্ছেন, সাধারণ জ্বরে আক্রান্ত হয়েও বাসিন্দাদের অনেকে করোনা আতঙ্কে ভুগছেন।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০৩:১৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

করোনা পরীক্ষা করাবো, রক্ত দিতে হবে? প্রশ্ন শুনে চমকে উঠেছিলেন জলপাইগুড়ির একটি প্যাথোলজি পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্মীরা। ওই ব্যক্তিকে কর্মীরা প্রশ্ন করেছিলেন, করোনা সংক্রমণ হয়েছে এমন তিনি কেন মনে করছেন। তার উত্তরে জলপাইগুড়ি শহরের একটি হাইস্কুলের ওই কর্মী দাবি করেছিলেন, তাঁর জ্বর এসেছে, মাথাব্যাথাও রয়েছে।

Advertisement

শহরের বেশ কিছু প্যাথোলজি পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্মীরা জানাচ্ছেন, সাধারণ জ্বরে আক্রান্ত হয়েও বাসিন্দাদের অনেকে করোনা আতঙ্কে ভুগছেন। অনেকে নিজে থেকে এসে করনোভাইরাস সংক্রান্ত পরীক্ষা করাতে চাইছেন। থানামোড়ের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রের তরফে সুজিত চক্রবর্তী বলেন, “আমরা সকলকেই বলছি সরকারি কেন্দ্রেই একমাত্র পরীক্ষা হয়। প্রতিদিনই একাধিক ব্যক্তি আসছেন। ফিরিয়ে দিলে অসন্তুষ্টও হচ্ছেন অনেকে।”

অভিযোগ উঠেছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষার নকল কিট বিক্রিরও। বেগুনটারির এক প্যাথোলজি কেন্দ্রের কর্মী দাবি করলেন, কয়েকটি সংস্থা তাঁদের কাছে করোনার কিট বিক্রি করতে চেয়েছিল। ওই কর্মীর কথায়, “খোঁজখবর করে দেখেছি সেগুলি সবই নকল কিট। সংক্রমণ হয়ে থাকলেও কিট পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ অর্থাত সংক্রমণ হয়নি এমন তথ্যই জানা যাবে।”

Advertisement

কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা কিছু পরীক্ষাকেন্দ্রে কিট সরবরাহ করেছে বলে খোঁজ পেয়েছে স্বাস্থ্য দফতরও। কিছু জায়গায় চড়া দাম নিয়ে করোনাসংক্রমণ পরীক্ষা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছে প্রশাসন। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলছে। কাউকে অযথা আতঙ্কিত হতে হবে না। সরকারি প্রচার আরও বেশি করে করা হবে। প্যাথোলজি পরীক্ষাকেন্দ্রের ওপরেও নজর রাখা হচ্ছে।”

করোনা সংক্রমণ নিয়ে বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ও চিকিৎসক সন্দীপ সাহা। তিনি বলেন, “কারও জ্বর বা মাথাব্যাথা হলে চিকিৎসককে দেখান, তাঁর পরামর্শ নিন। অযথা করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। কোনও পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়েও লাভ নেই, এখানে সেই পরীক্ষার পরিকাঠামো নেই।”

সম্প্রতি দুবাই এবং কুয়েত থেকে জলপাইগুড়িতে ফিরেছেন কয়েকজন বাসিন্দা। একটি বাণিজ্যিক এবং শিক্ষামূলক ভ্রমণ থেকে ফিরেছে দু’টি দল। তাঁদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্ক শুরু হয়েছে। সেই দলে থাকা একজন জ্বরে আক্রান্তও হয়েছে। তিনিও করোনা পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন একটি প্যাথোলজি কেন্দ্রে। চিকিৎসক অবশ্য তাঁকে জানিয়েছেন, এখনই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। শহর ও লাগোয়া এলাকায় বেড়েছে মাস্ক বিক্রিও। এন ৯৫ মাস্ক না হলেও বিভিন্ন ধরনের সাধারণ মাস্ক ব্যবহার করছেন অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement