প্রতীকী চিত্র
নাকে তেল দিয়ে ঘুমোনর কথা তো শোনা যায়। কিন্তু তা বলে নাকে তেল দিয়ে দৌড়নো? এখন এমনটাই করছেন শিলিগুড়ি কমিশনারেটের পুলিশ কর্মী ও আধিকারিকরা। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অর্থবের টোটকা মেনেই এমনটা হচ্ছে। শুধু নাকে সর্ষের তেলই নয়, করা হচ্ছে গার্গল। গলা ভেজানো হচ্ছে লেবু জল ও চা দিয়ে।
পুলিশ সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের সিআইডি-র উত্তরবঙ্গের এক স্পেশাল সুপার, কমিশনারেটের এক ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের আত্মীয় থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক করোনা আক্রান্ত, পুলিশ কুকুরের হ্যান্ডলার এক কনস্টেবল ও তাঁর স্ত্রী কমিশনারের টোটকায় অনেকটাই সুস্থ। এখন অফিসারদের মোবাইলে মোবাইলে কমিশনারের এই টোটকা ঘুরছে। পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অর্থব অবশ্য এসব নিয়ে বেশি বলতে চান না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা তো চিকিৎসক নই। তবে আমরা সবাই ছোটবেলা থেকে মা, ঠাকুমাদের তৈরি করা পথ্য বা সাধারণ ঘরে থাকা জিনিসপত্র দিয়ে শারীরিক ক্ষমতা বাড়ানো দেখেছি। সেগুলিই আমার সহকর্মীরা ব্যবহার করছেন।’’ তিনি জানান, করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারিতে থেকেই লড়াই করতে হবে। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতেই হবে। ফোর্সের সবাইকে সেটাই বলেছেন বলে জানান তিনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র শিলিগুড়ি এসেছিলেন। তাঁর সম্মানে পুলিশ কমিশনার দুপুরে খাবারের আয়োজন করেন। এক সিআইডি কর্তাকেও ডাকা হয়। কিন্তু তিনি জ্বর, শরীর ব্যাথায় কাবু হয়ে যান। কমিশনারকে তিনি তা বলতেই তাঁকে গরম জলের ধোঁয়া টানা, গার্গল, নাকে সর্ষের তেল ঘষা, লেবু দিয়ে গরম জল- চা খাওয়ার মতো একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়। তা করে দু’দিনেই সুস্থ হন ওই কর্তা। এক ডেপুটি কমিশনার তাঁর আত্মীয়কেও এইভাবে সুস্থ করেন।
গত সপ্তাহেই প্রথমবার শিলিগুড়ি পুলিশে করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। দার্জিলিং মোড়ের কাছে পুলিশ আবাসনের বাসিন্দা পুলিশ কুকুরের হ্যান্ডলার এক কনস্টেবল আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর স্ত্রীও আক্রান্ত। দু’জন কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কালিম্পঙের দুই সিভিক ভলান্টিয়র আক্রান্ত হয়েছেন। এর বাইরে এখনও সরকারিভাবে কোনও পুলিশকর্মীর আক্রান্তের খবর নেই। কিন্তু রোদ-বৃষ্টিতে সারাদিন কাজ করে অনেক পুলিশকর্মী, সিভিক ভলান্টিয়র সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ সবই করোনার উপসর্গ হলেও করোনা নয়। কিন্তু গোড়া থেকেই সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রেম দোরজি ভুটিয়া বলছেন, ‘‘শরীরকে গরম রেখে নাক, গলা-বুক টানা পরিষ্কার রাখলে সক্ষমতা ঠিক থাকবেই। সঙ্গে মানতে হবে শারীরিক দূরত্ব, মাক্স পরা এবং হাত পরিষ্কারের মত বিধিও।’’