ফাইল চিত্র।
খালি সিলিন্ডার আসছে না গুজরাত থেকে। প্রতিদিনই অক্সিজেন সমস্যায় ভুগছেন জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের কোভিড রোগীরা। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় অক্সিজেন তৈরির প্ল্যান্ট রয়েছে। কিন্তু সিলিন্ডার তৈরির কারখানা নেই। এই এলাকার সব প্ল্যান্টেই ফাঁকা সিলিন্ডার আসে গুজরাত থেকে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য থেকেই এতদিন অক্সিজেনের খালি সিলিন্ডার এসেছে জলপাইগুড়ি এবং লাগোয়া জেলাগুলির প্ল্যান্টে। মহারাষ্ট্রেও সিলিন্ডার তৈরির কারখানা রয়েছে। তবে গুজরাতের সংস্থাগুলির সঙ্গেই সারাবছর লেনদেন চলে এদিককার সংস্থাগুলির।
চলতি বছরের জানুয়ারির পর গুজরাতি সংস্থাগুলি সিলিন্ডার পাঠানো তো দূরের কথা, এ রাজ্যের বহু অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থার বরাতই নেয়নি। যার ফলে নতুন সিলিন্ডার হাতে পায়নি এখানকার সংস্থাগুলি। তার জেরেই সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি। সংস্থাগুলির দাবি, তরল অক্সিজেনের অভাব নেই। অভাব রয়েছে সিলিন্ডারের। চাহিদা মতো সিলিন্ডার হাতে না থাকাতেই অক্সিজেন পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে না কোভিড হাসপাতালগুলিতে।
জলপাইগুড়ির বিশ্ববাংলা কোভিড হাসপাতালে রবিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি এক ব্যক্তির শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে শুরু করে। পরিবারের দাবি, হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই বলে তাঁদের জানানো হয়। রোগীর পরিবার নিজেরা অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে বাড়িতে নিয়ে যান রোগীকে। রাতেই রোগীর মৃত্যু হয় বলে দাবি। পরপর কয়েকদিন সন্ধের পরে কোভিড হাসপাতালে অক্সিজেনের সঙ্কট তৈরি হয়েছিল বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। তবে অক্সিজেন সরবরাহে কোনও সমস্যা আছে বলে জানি না।” অক্সিজেন জোগানে যাতে কোনও ঘাটতি না হয় তার জন্য একাধিক সংস্থাকে সরবরাহের দায়িত্ব দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এমনই একটি সরবরাহকারী সংস্থার তরফে জানানা হয়েছে, হাসপাতাল যতগুলি খালি সিলিন্ডার দিচ্ছে ততগুলি ভর্তি করে দেওয়া হচ্ছে। অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ছে। সেই তুলনায় সিলিন্ডার মিলছে না বলে অক্সিজেন ভরে দেওয়া যাচ্ছে না। অক্সিজেন সরবরাহকারী একটি সংস্থার কর্ণধার সুজয় সর্বাধ্যক্ষ বলেন, “তরল অক্সিজেনের অভাব আপাতত নেই। কিন্তু সিলিন্ডার পাচ্ছি না। গত এক বছরে গুজরাতের সংস্থাগুলি একটিও নতুন সিলিন্ডার দেয়নি। এখন সিলিন্ডার কিনতে চেয়ে প্রতিদিন যোগাযোগ করছি, আমাদের বরাত নিচ্ছেই না।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গুজরাতের সংস্থা থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার পায়নি কোচবিহার স্বাস্থ্য প্রশাসনও। শ’খানেক সিলিন্ডার তারা চেয়ে পাঠালেও সংস্থাগুলি দেয়নি বলে দাবি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “সরকারের শীর্ষস্তরে সিলিন্ডার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয়েছে।”