তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। ফাইল চিত্র।
ঘুষ নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করছে টিম পিকে’র সদস্যেরা। দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্য নেতৃত্বের কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। টিম পিকে’র দায়িত্বে থাকা সদস্যদেরও একই অভিযোগ করেন বিধায়ক।
দু’দিন আগে তিনি দলের জেলা কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেন। প্রয়োজনে তিনি বিধায়ক পদ ছাড়তেও প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান। তাঁর অভিযোগ, নির্দিষ্ট কিছু নেতার আতিথেয়তায় পিকে টিমে’র সদস্যেরা থাকছেন। তাঁদের মতো রিপোর্ট তৈরি করেই পাঠাচ্ছেন তাঁরা। বিধায়কের মোবাইল সুইচড অফ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি সাংগঠনিক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে তাঁর ধর্মসভার পার্টি অফিসও বন্ধ। দলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “তৃণমূল গণতান্ত্রিক দল, প্রত্যেকেই নিজের মত জানাতে পারেন। তবে বিধায়ক আমাদের অভিভাবক। রাজ্য নেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে কথা বলছেন।”
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের জেলা ও ব্লক কমিটি নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। ওই ব্লক কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে প্রথমে প্রত্যেক বিধায়কের কাছ থেকে তালিকা নেওয়া হয়। দলের জেলা সভাপতির কাছ থেকেও নেওয়া হয়। সেই সঙ্গেই টিম পিকে একটি তালিকা তৈরি করে। দলের মধ্যে চাউর হয়, টিম পিকে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি এবং লোকসভা নির্বাচনের পরে যে নেতা দাঁত কামড়ে এলাকায় পড়ে থেকে সংগঠন আগলে রেখেছেন তাঁদের গুরুত্ব দিয়েই তালিকা তৈরি করেছেন। তা নিয়েই বিধায়কদের একটি বড় অংশের সঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিমের বিরোধ তৈরি হয়। পরে কলকাতায় বিধায়ক এবং জেলা নেতাদের ডেকে বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি এবং প্রশান্ত কিশোর। তাতেও সমাধান অধরা থেকে যায়। গত ২ অক্টোবর জেলা ও ব্লক কমিটি প্রকাশ করা হয়। পরদিনই মিহির অভিযোগ করেন, ব্লক সভাপতি ও জেলা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিধায়কদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে।
কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত মিহির গোস্বামীর বিধানসভার মধ্যে পড়ে। ওই ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে একটি সাংগঠনিক ব্লক তৈরি করেছে তৃণমূল। মিহির অনুগামীদের অভিযোগ, সেই ব্লকের সভাপতি করার জন্যে বিধায়ক যে নাম জমা দিয়েছিলেন তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। সেখানে জেলা সভাপতির ‘কাছের’ লোককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা কমিটির দায়িত্বের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।