Unity Among TMC

‘ঐক্যের ছবি’ তুলে ধরার চেষ্টা তৃণমূলের

প্রয়োজনে, কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেন বলেও বার্তা দেন। এর পরেই কোচবিহারে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ , অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৯
Share:

শিলিগুড়িতে বৈঠকের পরে কোচবিহারের তৃণমূল নেতারা। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের সময় দলের ‘ঐক্যবদ্ধ’ ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করল কোচবিহার জেলা তৃণমূল। বৃহস্পতিবার রাতে কোচবিহারে বৈঠক করেন দলের শীর্ষ নেতারা। শুক্রবার শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যায় একটি বৈঠকে যোগ দেন কোচবিহার জেলার সমস্ত শীর্ষ নেতা। বৈঠকের পরে, বাইরে বেরিয়ে সব নেতারা হাসি মুখে একটি ছবি তোলেন। সে ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে, মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারের সব নেতাকে একযোগে কাজ করতে হবে। কিন্তু নেতাদের একজোট করতে বেগ পেতে হচ্ছিল তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিককে। এ বার উত্তরবঙ্গে পৌঁছেই কোচবিহারে নেতাদের মধ্যে ‘দূরত্ব’ নিয়ে ক্ষোভ জানান তিনি। প্রয়োজনে, কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেন বলেও বার্তা দেন। এর পরেই কোচবিহারে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়। এ দিন উত্তরকন্যায় বৈঠকের পরে বাইরে বেরিয়ে সব নেতারা হাসি মুখে একটি ছবি তোলেন। সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে ছবিটি। ছবিতে তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও উদয়ন গুহকে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সমাজমাধ্যমে দেওয়া ছবিতে উদয়ন লিখেছেন, ‘‘এ বার কোচবিহারে একেবারে নতুন তৃণমূল কংগ্রেস।’’ রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘‘হাম সব এক হ্যায়।’’ আর এক তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায়ও লেখেন, ‘‘আমরা সবাই এক জোট লড়াইয়ের অপেক্ষায়।’’ যা দেখে বিজেপির।কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-র কটাক্ষ, ‘‘এই জোট ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে। আসলে সবাই যাঁর-যাঁর চাকরি বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত একটি দলে এর থেকে বেশি কী আশা করা যায়।’’

দিন দুয়েক আগেই উত্তরবঙ্গ সফরে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন কার্শিয়াংয়ে প্রশাসনিক সভাও করেন। এর পরে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতেও সভা করার কথা মমতার। কোচবিহারে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ দীর্ঘদিনের। কখনও রবীন্দ্রনাথ ও উদয়ন, কখনও রবীন্দ্রনাথ ও পার্থপ্রতিমের মধ্যে ‘বিরোধ’ প্রকাশ্যে এসেছে। যা সামাল দিতে একাধিক বার কোচবিহারে জেলা সভাপতিও পরিবর্তন করা হয়। বর্তমান জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক দায়িত্ব পাওয়ার পরে, সবাইকে নিয়ে চলার চেষ্টা শুরু করেন। কিন্তু গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে ফের তৃণমূলে ‘বিরোধ’ মাথাচাড়া দেয়। দল মনে করছে, এ ভাবে চললে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে এঁটে ওঠা সম্ভব না। বিজেপির কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। তিনি এক জন দক্ষ সংগঠক বলেও পরিচিত। সেখানে তৃণমূল শিবির ছন্নছাড়া থাকলে, লোকসভা ভোটের সময় রাজ্যের শাসক দল কতটুকু লড়াই দিতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের। দল সূত্রের দাবি, সে জন্যই সব নেতাদের নিয়ে এক সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ১৭ ডিসেম্বর দিনহাটার সংহতি ময়দানে দশ হাজার কর্মীকে নিয়ে সভা করবেন জেলার তৃণমূল নেতারা। সেখান থেকেই ঐক্যবদ্ধ ভাবে লোকসভার প্রচার শুরু করা হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement