উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সমাবর্তন নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসেই সমাবর্তন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি। তবে চিঠি পাঠিয়েও আচার্য বা রাজ্যপালের সাড়া না মেলায় সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। সম্প্রতি কর্মসমিতি ফের বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সমাবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সমিতির বৈঠকে সমাবর্তনের মুখ্য অতিথি হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসারে কর্মসমিতি সমাবর্তনের তারিখ ঠিক করে। এতদিন ধরে সেই ঠিক করা তারিখে চূড়ান্ত পর্যায়ের সম্মতি দিতেন রাজ্যপাল। যদিও আচার্য অনুপস্থিত থাকলে উপাচার্য সমাবর্তন পরিচালনা করতে পারেন বলেই জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের একাংশ। তবে আচার্যের অনুমোদন ছাড়া কর্তৃপক্ষ সমাবর্তনে সাম্মানিক ডিএসসি ও ডিলিট দিতে পারবেন না বলেও জানান তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ডিসেম্বরে সমাবর্তন করার সিদ্ধান্তের কথাও রাজ্যপালকে জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত ওই বিষয়ে রাজ্যপালের পক্ষ থেকে কোন বার্তা দেওয়া হয়নি। ফলে সমাবর্তনে রাজ্যপাল থাকবেন কি না, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
সম্প্রতি উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, একাধিক আধিকারিক ও কিছু ছাত্র-ছাত্রীদেরও ডাকা হয়েছিল। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার কথা শোনেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, তখনই মমতাকে সমাবর্তনে আসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সমাবর্তনে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতির বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত পাওয়া গিয়েছে। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। সব ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই সমাবর্তন হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর বুধবার বিকেলে ক্যাম্পাসে এসে দীর্ঘ ক্ষণ রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা। যদিও সেই বৈঠক নিয়ে রেজিষ্ট্রার বা পুলিশের কর্তারা কোনও কথা বলতে চাননি। মুখ্যমন্ত্রী আসবে বলে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতেই পুলিশ কর্তারা এসেছিলেন বলেই ধারণা শিক্ষকদের অনেকের। কর্মসমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, পদ্ধতি মেনে ৩ জন করে মোট ৬ জনের নাম সান্মানিক ডিএসসি ও ডিলিটের জন্য ঠিক করে তা কোর্টের অনুমতি সাপেক্ষে রাজ্যপালের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আইন ও নিয়ম মেনে কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের কথা রাজ্যপালকে জানানো হয়েছে। উনি অনুমোদন না করলে সাম্মানিক ডিএসসি ও ডিলিট দেওয়া নিয়ে সমস্যা হবে। তবে সমাবর্তনের বাকি ব্যবস্থাপনায় কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’ রেজিস্ট্রার দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ‘‘ডিসেম্বরের মধ্যেই সমাবর্তন হবে। কর্মসমিতিতে গৃহীত সিদ্ধান্তের কথা রাজ্যপালকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’