বিধি ভেঙে প্রচারের অভিযোগ

কোথাও বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুলছে রাজনৈতিক দলের পতাকা। কোথাও আবার নেতানেত্রীদের ছবি ফোনের খুঁটি থেকে সরকারি জমিতে থাকা গাছেও। কিছু জায়গায় ফেস্টুন, ব্যানার লাগান হয়েছে। তৃণমূল বিরোধীদের অভিযোগ, নির্বাচন বিধি ভেঙে লাগানো ওই সব পতাকা, ব্যানারের বেশির ভাগ তৃণমূলের।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৫ ০১:২৭
Share:

বিধি ভেঙে পুর এলাকার বাতিস্তম্ভে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

কোথাও বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুলছে রাজনৈতিক দলের পতাকা। কোথাও আবার নেতানেত্রীদের ছবি ফোনের খুঁটি থেকে সরকারি জমিতে থাকা গাছেও। কিছু জায়গায় ফেস্টুন, ব্যানার লাগান হয়েছে। তৃণমূল বিরোধীদের অভিযোগ, নির্বাচন বিধি ভেঙে লাগানো ওই সব পতাকা, ব্যানারের বেশির ভাগ তৃণমূলের। তার পরেও ওই ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। এ বিষয়ে বাম-বিজেপির এক সুর। তৃণমূল অবশ্য পাল্টা অভিযোগ তুলেছে বিরোধীদের দিকেই।

Advertisement

সব মিলিয়ে যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলির চাপানউতোর প্রকাশ্যে এসেছে শুক্রবার। কোচবিহার জেলাশাসকের দফতরে আয়োজিত সর্বদল বৈঠকে প্রশাসনের তরফে নির্বাচন বিধি মানার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। রাজনৈতিক দলগুলির কাছে সম্ভাব্য স্পর্শকাতর বুথের তালিকাও চাওয়া হয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “ওই সংক্রান্ত অভিযোগের রেজিস্ট্রার এখনও ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলিকে তাঁদের চিহ্নিত সম্ভাব্য উত্তেজনাপ্রবণ বুথের তালিকা তিন দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। তালিকা পেলে খতিয়ে দেখা হবে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি পুরসভা এলাকাতেই একাধিক দল তৈরি করে ওই ব্যাপারে নজরদারি শুরু হয়েছে। বিরোধীরা অবশ্য অভিযোগ করেছেন, জেলা জুড়ে বেশ কিছু সরকারি জায়গায় পোস্টার, ব্যানার, পতাকা লাগিয়েছে তৃণমূল। অথচ সে সব নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তমসের আলি বলেন, “কোচবিহারের সুনীতি রোড, দিনহাটা রোড, পান্থশালা রোড, রেল গুমটি-সহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারি সামগ্রীতে শাসক দলের প্রচার ব্যানার, পতাকা রয়েছে। বিষয়টি প্রশাসনের দেখা দরকার। উত্তেজনাপূর্ণ বুথের পাশাপাশি আমরা ওই ব্যাপারে তালিকা করেও প্রশাসনকে দেব।”

Advertisement

সিপিএম নেতা পার্থপ্রতিম সেনগুপ্ত বলেন, “তৃণমূলই বেশির ভাগ জায়গা বিধি ভেঙে প্রচারে ব্যবহার করছে।” বিজেপির রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিত্যানন্দ মুন্সির অভিযোগ, বিধি ভেঙে কোচবিহারের বেশির ভাগ জায়গায় শাসক দলের প্রচার সামগ্রী রয়েছে। প্রশাসনের কাছে আগের বৈঠকেই আমরা এ নিয়ে বলেছি। এ দিন উত্তেজনাপূর্ণ বুথের ব্যাপারেও বলা হয়। দলীয় ভাবে খোঁজ নিয়ে আমরাও তালিকা দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলব।”

তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কোচবিহারের কেশব রোড, কাছারি মোড়, দিনহাটা মেন রোড-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী দলের পতাকা, ব্যানার রয়েছে। যাঁরা এ সব বলছেন, তাঁরা আগে সে সব খুলে দিন। বড় জোর দু’চারটি ক্ষেত্রে আমাদের দলের এ রকম কিছু থাকতে পারে। সে সব সরিয়ে নেব।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী অবশ্য কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। তিনি জানান, তাঁদের দলের ব্যানার বিধি ভেঙে লাগানো থাকলে সবগুলিই খুলে নেওয়া হবে।

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, শুক্রবারের সর্বদল বৈঠকে কোচবিহার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তোর্সার চরে দলের পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা নিয়ে অভিযোগ জানান ওই ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী পার্থপ্রতিমবাবু। তুফানগঞ্জে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার দাবিও তোলা হয় বৈঠকে। অন্তত ৪৮ ঘণ্টা আগে সভার অনুমতি, সভায় চারটি চোঙ ও ২টির বেশি সাউন্ড বক্স না বাজানো, একই জায়গায় দু’টি দলের পর পর সভা হলে দু’ঘণ্টার মধ্যে মঞ্চ সরিয়ে নেওয়ার মতো একাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিরোধীদের সম্ভাব্য স্পর্শকাতর বুথের তালিকা দেওয়ার দাবি নিয়ে সর্বদল বৈঠকে প্রতিবাদ জানান উপস্থিত তৃণমূলের প্রতিনিধি দেবাশিস কর। তিনি বলেন, “জেলা জুড়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে। বিরোধীরা বিভ্রান্তি করে হাওয়া গরম করতে সম্ভাব্য উত্তেজনাপূর্ণ বুথের তালিকা দিতে চাইছেন। আমরা তালিকা দেব না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement