পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হলেন জলপাইগুড়ি আদালতের এপিপি প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ও এক ব্যবসায়ী৷ অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন জলপাইগুড়ি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলার সৈকত চট্টোপাধ্যায়৷ প্রদীপবাবু বর্তমানে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন৷ এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই থানায় হত্যার চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন সৈকতবাবু৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ যদিও এখনও গাড়ির হদিশ মেলেনি৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে বারোটা থেকে পৌনে একটার মধ্যে। সমাজপাড়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন প্রদীপবাবু৷ যার মালিক ব্যবসায়ী আনন্দ ঘোষ৷ পুলিশ জানিয়েছে, আনন্দবাবুর স্কুটিতে চেপেই প্রদীপবাবু কদমতলার দিক থেকে সমাজপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন৷ তৃণমূল কাউন্সিলার তথা আইনজীবী সৈকতবাবু তখন ডিবিসি রোডে চেম্বার বন্ধ করে বাইরে বেরোচ্ছিলেন। রাস্তায় তাঁদের দেখা হলে স্কুটি থামিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন।
সৈকতবাবুর অভিযোগ, ‘‘আনন্দবাবুর স্কুটিটি তখন সেখানে দাঁড় করানো ছিল৷ ঠিক সেই সময় আচমকাই কদমতলার দিক থেকে আসা পুলিশের স্টিকার লাগানো লাল রঙের একটি গাড়ি মাঝ রাস্তা থেকে বাঁ দিকে বেঁকে প্রদীপবাবু ও আনন্দবাবুকে ধাক্কা দিয়ে ফের রাস্তায় উঠে থানা মোড়ের দিকে দ্রুত গতিতে চলে যায়৷’’ সৈকতবাবুর কথায়, ‘‘গাড়ির ধাক্কায় প্রদীপবাবু প্রায় ত্রিশ ফুট দূরে ছিটকে পড়েন৷ চোট পান আনন্দবাবুও৷ আমি কোনও মতে লাফিয়ে প্রাণে বেঁচে যাই৷’’
সঙ্গে সঙ্গে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রদীপবাবু ও আনন্দবাবুকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান অবস্থার অবনতি হলে এ দিন ভোরে প্রদীপবাবুকে শিলিগুড়িতে রেফার করা হয়৷ জানা গিয়েছে, প্রদীপবাবুর মাথায় চোট লেগেছে৷ এ দিন দুপুরে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সৈকতবাবু৷ তিনি জানান, গাড়িটিতে চালক ছাড়াও আরও দুজন ছিল৷ জানালার কাচও খোলা ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার পর বারবার চিৎকার করে গাড়িটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হলেও দাঁড়ায়নি৷ আমি নিশ্চিত, আমাদের কাউকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যেই গাড়িটি ও ভাবে পরিকল্পনা করে ধাক্কা দেয়৷’’
জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ সরকার বলেন, ‘‘আমাদেরও সন্দেহ এই ঘটনার পিছনে একটা ষড়যন্ত্র রয়েছে৷ রাতের বেলায় ওই ঘটনার পর পুলিশ যে ভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে, আমরা চাইব ঠিক সে ভাবেই পুলিশ এই রহস্যেরও কিনারা করবে৷ এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে৷’’
যদিও পুলিশের দাবি, জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানা বা ট্রাফিক থানায় এই মুহুর্তে লাল রঙের কোনও অমন গাড়ি নেই৷ ফলে এই গাড়িটা বাইরে থেকে এসেছিল কি না তা-ও খতিয়ে দেখছেন পুলিশ কর্তারা৷ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘গাড়িটিকে খুঁজে বের করতে রাত থেকেই বিভিন্ন জায়গায় নাকা করে তল্লাশি চলছে৷ আশা করছি শীঘ্রই গাড়িটিকে ধরা সম্ভব হবে৷’’