জাল শংসাপত্র এবং ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে কিছু চিকিৎসক শিলিগুড়িতে কাজ করছেন বলে সন্দেহ জেলা স্বাস্থ্য দফতরেরই।
শহরের নার্সিংহোমগুলির একাংশে এ ধরনের কিছু ভুয়ো চিকিৎসক রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার (এরএমও) হিসাবে রয়েছেন বলেও কয়েকটি অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে পেয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সে কারণেই তারা নার্সিংহোমগুলির চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর খতিয়ে দেখবেন। দ্রত সেই কাজ শুরু করার কথা। জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশের সন্দেহ মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ির মতো প্রত্যন্ত এলাকায়, গ্রামাঞ্চলে ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে এ ধরনের চিকিৎসক থাকার আশঙ্কা প্রবল। বেশ কিছু জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছে বলেও ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকেই জানানো হয়েছে, সেবক রোড, খালপাড়া এলাকার কয়েকটি নার্সিংহোমে এ ধরনের রেসিডেন্সিয়াল অফিসার হিসাবে কোনও ভুয়ো চিকিৎসক রয়েছে কি না, তা দেখা হবে। ভুয়ো চিকিৎসকের অভিযোগ প্রসঙ্গে পর্যটনমন্ত্রী তথা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব বুধবার বলেন, ‘‘বাম জমানায় ৩৪ বছরে এ সব দেখা হয়নি। সরকার পরিবর্তনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই কাজ হচ্ছে। প্রেসক্রিপশনে এখন রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখে দিতে হচ্ছে। সরকারের যে ‘মেকানিজম’ রয়েছে, তা দিয়ে দেখে নেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে চিকিৎসক হিসাবে কাজ করার বিষয়টি খুবই বিপজ্জনক। তার উপর মানুষের জীবন নির্ভর করে। সরকারের তরফে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির বিভিন্ন নার্সিংহোমগুলোতে ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে কোনও চিকিৎসক আরএমও হিসাবে কাজ করছেন কি না, সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে। নার্সিংহোম ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকাগুলোতে এ ধরনের চিকিৎসক থাকার আশঙ্কা রয়েছে। নির্দিষ্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিলেই এখন বিস্তারিত বোঝা যাচ্ছে। দ্রুত সেই কাজ করা হবে।’’
তিনি জানান, কিছু অভিযোগ তাঁদের কাছে আসবে বলে প্রত্যাশা করছেন। সেগুলো সমস্তই খতিয়ে দেখা হবে। শহরে অন্তত ৬৫টি নার্সিংহোম রয়েছে। সেগুলোতে বহু চিকিৎসক কাজ করছেন। তা ছাড়া, বিভিন্ন ওষুধের দোকানে চেম্বার করেন এমন অনেক চিকিৎসকও রয়েছে। শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমের কর্ণধার তথা নর্থ বেঙ্গল প্রাইভেট হেল্থ কেয়ার সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত রায় জানান, তাঁরাও চান বিষয়টি খতিয়ে দেখা হোক। কেন না, এর সঙ্গে চিকিৎসা পরিষেবার সুনাম জড়িয়ে। কোথাও কোনও ভুয়ো চিকিৎসক থাকলে সরকারের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।