ছবি:শাটারস্টক
চিকিৎসার বিলের পরিমাণ নিয়ে টানাপড়েনের অভিযোগ উঠল রোগীর পরিবার ও নার্সিংহোমের মধ্যে। ৩১ অগস্ট, সোমবার শিলিগুড়ির ঘটনা। পরিবারের অভিযোগ, বিস্তর ঝামেলার পরে আগের বিলের চেয়ে অনেক কম নিয়ে রোগীকে ছাড়ে নার্সিংহোম। শেষ পর্যন্ত রোগীকে ভর্তি করানো হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে।
৩০ অগস্ট, রবিবার রাত ন’টায় শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রধাননগরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল সোনাদার বাসিন্দা ৬০ বছরের মজবুল্লা হুসেনকে। পরিবারের অভিযোগ, পরদিন বেলা ১১টায় বিল জানতে চাইলে জানানো হয় ৮০ হাজার ৮৭০ টাকা বিল হয়েছে। এত টাকা দিতে পারবেন না বলায় নার্সিংহোমের সঙ্গে দরাদরি শুরু হয় বলে পরিবারের দাবি। ভর্তির সময় ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। অগ্রিমের হিসেব বাদ দিয়ে তাঁদের আরও ৬৫ হাজার টাকা দিতে বলা হয় বলে পরিবারের দাবি। শেষ পর্যন্ত দরাদরি করে আরও ১০ হাজার টাকা দিয়ে রোগীকে ছাড়িয়ে উত্তরবঙ্গে মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয় বলে পরিবার জানিয়েছে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে এসেছে। কেন এত টাকা বিল চাওয়া হয়েছিল প্রশাসন তদন্ত করে দেখবে।’’
কী কারণে এত বিল হল? পরিবারের দাবি, নার্সিংহোম থেকে জানানো হয় সিসিইউ কোভিড আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখায় বিল বেশি হয়েছে। প্রথমে ১৫টি পরীক্ষার খরচ ধরা হয় সাড়ে ২২ হাজার টাকা। পিপিই কিটের জন্য প্রতিদিন ১ হাজার টাকা করে নেওয়া হবে বলা হলেও বিলে ৯ হাজার টাকা লেখা হয় বলে অভিযোগ। এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলায় প্রথমে কমিয়ে মোট বিল ৫৫ হাজার করা হয় বলে দাবি পরিবারের। সেই বিলে তখন ১০টি পরীক্ষার জন্য ৬ হাজার টাকা ধরা হয়। রোগীর ছেলে বলেন, ‘‘শেষে ১৫ হাজার দিতে হবে বলা হয়। মোবাইল বন্ধক রেখে সব মিলিয়ে ১০ হাজার জোগাড় করে দিই। জোর করায় আরও ৫ হাজার টাকা ১ মাসের মধ্যে দেব বলে সই করে দিই। বিলও দেয়নি।’’
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রথমে ‘প্রভিশনাল বিল’ দেওয়া হয়। তাতে কিছু পরীক্ষা আছে, যেগুলি হয়নি বা বাড়তি ওষুধ ধরা থাকে। তাই পরে যেগুলি লাগেনি, সে সব বাদ দিয়ে ৫০ হাজার টাকার মতো বিল হয়। তা ছাড়া রাত ১২টার আগে ভর্তি হলে আগের দিনের শয্যা ও চিকিৎসকের খরচ ধরা হয়। রোগীর পরিবার মোট ২৫ হাজার টাকা দিয়েছে বলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তাহলে ওই পরিমাণ টাকার বিল দেওয়া দেওয়া হয়নি কেন? নার্সিংহোমের দাবি, ওই সময় বিল করতে সময় লাগত। তাই পরে এসে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘রোগীর পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে ভাল হয়। গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’