Cooch Behar

সোনা ব্যবসায়ী খুন ঘিরে উত্তপ্ত কোচবিহার, ক্ষিপ্ত জনতার তাড়া, দৌড় পুলিশের

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যবসায়ীর নাম প্রাণতোষ সাহা। তাঁর বাড়ি কোচবিহার পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২১ ১৫:৪৮
Share:

ব্যবসায়ীর মৃত্যুর পর স্থানীয়দের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার। খুনের ঘটনার পর রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ আসার পর পুলিশের উপরও চড়াও হন তাঁরা। জনতার রোষ থেকে বাঁচতে রীতিমতো দৌড়ে পালায় পুলিশ। পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসও ছোড়ে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যবসায়ীর নাম প্রাণতোষ সাহা। তাঁর বাড়ি কোচবিহার পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকায়। অন্য দিনের মতোই বুধবার সকালে দোকান খুলে কাজ শুরু করছিলেন প্রাণতোষ। সে সময় ২ জন দুষ্কৃতী বাইকে করে আসে তাঁর দোকানের সামনে। তার পর খুব কাছ থেকে গুলি করে। গুলির শব্দ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তাঁরা দুষ্কৃতীদের তাড়া করেন। পালানোর সময় ওই দুষ্কৃতীরা শূন্যে ২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এর পর গুলিবিদ্ধ প্রাণতোষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। জানা গিয়েছে, সোনার পাশাপাশি সুদের ব্যবসাও করতেন তিনি।

ভোটের আগে শহরের মধ্যে এ রকম ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও আসেনি পুলিশ। এই অভিযোগ করে কামেশ্বরী রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ২-৩ জায়গায় আগুনও জ্বালায় তারা। সে সময় পুলিশ এলে পুলিশের উপর চড়াও হয় ক্ষিপ্ত জনতা। পুলিশের গায়ে টায়ার ছুড়েও মারা হয়। রীতিমতো দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান পুলিশকর্মীরা। তার পরই কোতোয়ালি থানা থেকে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। সে সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়েন স্থানীয়রা। পাল্টা হিসাবে ২ রাউন্ট কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশও। লাঠি চার্জও করে। এবং অশান্তি সৃষ্টির জন্য চার জনকে আটক করে পুলিশ। পাশাপাশি প্রাণতোষের দোকানের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করেছে পুলিশ। মৃতের স্ত্রী পূজা সাহা বলেছেন, ‘‘প্রতিদিনের মতো দোকান খুলে কাজ করছিলেন। হঠাৎই গুলি চলার শব্দ কানে আসে। আমরা গিয়ে দেখি, লুটিয়ে পড়েছে উনি।’’

Advertisement

এই ঘটনার পর এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ করেন বিজেপি-র স্থানীয় নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, মৃত ব্যবসায়ী বিজেপি-র সমর্থক ছিলেন। এমনকি, যে ৪ জনকে পুলিশ আটক করেছে তাঁরা বিজেপি-র কর্মী বলে দাবি করেছেন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নিখিলরঞ্জন দে। আটকদের মুক্তির দাবিতে থানার সামনে ধর্নাতেও বসেছিলেন তিনি। নিখিল বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ও শহরে ঘটল খুনের ঘটনা। আসলে ভোটের আগে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে শাসকদল।’’ যদিও মৃতের স্ত্রী পূজা জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক ছিলেন না। বিজেপি-র অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেছেন, ‘‘কোথাও লাশ দেখলেই বিজেপি নিজের কর্মী বলে দাবি করে। যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তা নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। আমি চাই এই খুনের নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।’’ ঘটনা নিয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার দেবাশিস ধর বলেছেন, ‘‘তদন্ত প্রাথমিক স্তরে আছে। পরিবারের লোকের কথা অনুসারে রাজনীতির সঙ্গে মৃতের যোগ ছিল না। তবে ঘটনা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের ঝামেলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement