বেহাল: জলপাইগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে তিস্তা সেতুর গায়ে জন্মে গিয়েছে গাছ। ছবি: সন্দীপ পাল
উত্তর পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ রক্ষা করে তিস্তা সেতু। এই সেতুর উপর দিয়েই রোজ যায় কয়েকশো পণ্যবাহী ট্রাক থেকে শুরু করে যাত্রীবাহী বাস। কিন্তু এই ভার নেওয়ার মতো ক্ষমতা সেতুর ক্রমশ কমছে বলে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি। তাঁদের বক্তব্য, গাড়ির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তার উপরে সেতুটির রাস্তায় পিচের চাদরও পড়েছে বেশ কয়েকবার। তাতে সেতুটির উপরে ভার ক্রমশ বেড়েই চলছে। গাড়ি চালকেরাও বলছেন, সেতুতে ওঠার সময় ভয় হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য দাবি, সেতুতে খানাখন্দ বেড়েই চলছে, তবু তার মধ্যে দিয়েই রোজ ওভারটেক করে একের পর এক গাড়ি।
সেতুর দু’ধারের রেলিঙের অবস্থাও খারাপ। বেশ কয়েকবার সেতুর রেলিং ভেঙে ট্রাক পড়ে গিয়েছে। তিস্তা সেতুর রেলিঙের গা বেয়ে বেড়ে উঠেছে বট, পাকুড়, অশ্বত্থ গাছ।
ফুটব্রিজের অবস্থাও কঙ্কালসার। লোহার রড বের হয়ে রয়েছে। সেতুর দু’ধারের বৈদ্যুতিক বাতিগুলোও অকেজো। নীচের পিলারগুলোও দুর্বল হয়ে পড়ে রয়েছে। আগাছার স্তূপে ভরে রয়েছে। এক কথায় রক্ষণাবেক্ষণের কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে।
ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে এই সেতু তৈরি হয়। ১৯৬৮ সালের ৪ অক্টোবরে জলপাইগুড়ির বিধ্বংসী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেতুটি। এরপর ফের এই তিস্তা সেতুর সংস্কার করা হয়। কিন্তু তখন সেতুটি যত ভার নেবে বলে মনে করা হয়েছিল, এখন তা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সেতুর উপর তীব্র চাপ কমাতে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সময়েই আরও একটি সেতু নির্মাণের দাবিতে সরব হয় জলপাইগুড়ি জেলা বামফ্রন্ট। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান তদানীন্তন বাম নেতারা। কিন্তু এরপর তিস্তা দিয়ে অনেক জল গড়ালেও দাবি পূরণ হয়নি।
এই সেতুর ঠিক পাশেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ আরও একটি সেতু নির্মাণের কাজে হাত দিয়েছেন। বুধবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের টেকনিক্যাল ম্যানেজার অনন্তলাল বলেন, ‘‘এই সেতু সংস্কার ও নতুন সেতু নির্মাণের জন্য এলঅ্যান্ডটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থাই তিস্তা সেতুর দেখভাল করে। সেতুর দু’ধারের ভেঙে পড়া রেলিংও মেরামত করা হয়েছে।’’