প্রতীকী ছবি।
শীতে অনুষ্ঠানের শেষ নেই। ধর্মীয় থেকে সামাজিক অনুষ্ঠান প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে কোচবিহার শহরের কোথাও না কোথাও। আর একাধিক জায়গায় অভিযোগ উঠছে, মধ্যরাত পর্যন্ত তারস্বরে মাইক ও ডিজে-বক্স বাজানোর। তা নিয়ে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ।
এমনিতে কালীপুজোর সময়েই শব্দ দূষণের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রাও বেড়ে যায়। কেউ কেউ তা নিয়ে সরব হন। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে কিছু ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এই সময়ে কেউ যেন কিছুর তোয়াক্কা করছেন না বলে অভিযোগ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে অনুমতি নিতে হবে। বেআইনি ভাবে কিছু হলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, কোচবিহার শহরের একটি বিয়ে বাড়িতে ডিজে-বক্স বাজানোর অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। মহকুমাশাসক (কোচবিহার সদর) রাকিবুর রহমান বলেন, ‘‘কোথাও অভিযোগ পেলে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা সকলকে বলব, কোথাও কোনও অভিযোগ থাকলে, দ্রুত পুলিশ-প্রশাসনকে জানান।’’
কোচবিহার শহর তো বটেই, শহরতলি খাগড়াবাড়ি, ঘুঘুমারি থেকে শুরু করে দেওয়ানহাট, ভেটাগুড়ি, নিশিগঞ্জ, পুণ্ডিবাড়ি-সহ দিনহাটা, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ, তুফানগঞ্জের একাধিক জায়গায় ওই অভিযোগ উঠেছে। শীত পড়তেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। কোথাও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা বা সঙ্গীতের আসর বসছে। বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। শহর তো বটেই, গ্রামের দিকে কোচবিহারে বিয়ের অনুষ্ঠানে ডিজে-বক্স বাজানো হচ্ছে। তা এতই উচ্চস্বরে বাজছে যে, আশেপাশের বাসিন্দারা তো বটেই, এক কিলোমিটার পর্যন্ত মানুষ অস্বস্তি বোধ করছেন বলে অভিযোগ। ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলিতে চোঙা মাইক ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম মানা হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই কেউ কোনও নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না বলে অভিযোগ। দক্ষিণ খাগরাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা দীপায়ন পাঠক তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে রাত প্রায় দু’টোর সময়ে উচ্চস্বরে ডিজের আওয়াজ আসছিল। তাতে সকলে কার্যত জেগে ছিলাম।’’
নতুন বছরে ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এ সময়ে অনেক ছাত্রছাত্রী রাত জেগে পড়াশোনা করছে। কিন্তু রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাইক ও ডিজে-বক্সের আওয়াজ তাদের পড়ার ক্ষতি করছে বলেও অভিযোগ। এক ছাত্রের কথায়, ‘‘রাতের দিকে শব্দ থাকে না বলেই পড়াশোনায় সুবিধা হয়। কিন্তু এখন প্রায় প্রতিদিনই মাইকের আওয়াজ পাচ্ছি।’’ পরিবেশপ্রেমী অরূপ গুহ বলেন, ‘‘শব্দ দূষণের ক্ষতিকর দিক প্রত্যেকের জানা। মানুষ, পশু-পাখি প্রত্যেককে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। তার পরেও পরিস্থিতি পাল্টায় না। সকলের আওয়াজ তোলা উচিত। তা হলে পরিস্থিতি পাল্টাবে।’’