—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এ বার ‘হুমকি সংস্কৃতি’র অভিযোগ উঠছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েও। বেশ কিছু বিভাগেও খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে নানা ভাবেই ‘হুমকি সংস্কৃতি’ চলে আসছে। কথা না শুনলে পড়ুয়াদের নম্বর কমিয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষকদেরও হুমকির মুখে পড়তে হয় বলেও অভিযোগ। প্রাক্তন উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের আমল থেকেই এই ‘হুমকি সংস্কৃতি’ চলছে বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষকদের অনেকে। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তাঁকে পরে গ্রেফতার করে। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, সুবীরেশ ভট্টাচার্য উপাচার্য থাকার সময় কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে এক শিক্ষককে হুমকি দেওয়া হয়েছিল এক পড়ুয়াকে পাশ করানোর জন্য। তা না করায় তার প্রমোশন আটকে গিয়েছে বলে অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েও যে ‘হুমকি সংস্কৃতি’ সমানে চলে, সেটা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে গত শুক্রবারের কনভেনশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তুলে ধরেন খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডল।
শিক্ষকদের একাংশের দাবি, এখনও হুমকি চলে। ক্লাসে উপস্থিতির হার ঠিক না থাকলেও ‘পার্সেন্টেজ’ দিয়ে দিতে হবে বলে চাপ দেওয়া হয়। এটাই রীতি হয়ে গিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে শিক্ষকদের কাছেও সেই হুমকি এসে পৌঁছয় বলে অভিযোগ। শিক্ষক সমিতির সম্পাদক ওই সভায় সাফ বলেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজগুলোতে হুমকি সংস্কৃতি সামনে আসায় আমরাও হতবাক। কেন না আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই এ সব চলে। ভাবতাম, এ শুধু এখানকার বিষয়। এখন দেখছি এই হুমকি তা হলে সব জায়গাতেই চলছে!’’
বিশ্ববিদ্য়ালয়ে এই ‘হুমকি সংস্কৃতি’ নিয়ে কোথাও কোনও অভিযোগ কি হয়েছে? অর্ধেন্দুর দাবি, বুঝতেই পারা যায়, বিরুদ্ধে কথা বললে বা অভিযোগ করলে তাঁদের পরিণতি খারাপ হবে। শিক্ষক সমিতির সম্পাদকের এই বক্তব্যের সাড়া পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন। অস্থায়ী রেজিস্ট্রার দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘আগে কী হয়েছিল বলতে পারব না। এখন ও ধরনের কোনও অভিযোগ আসেনি। যদি হুমকি সংস্কৃতির কিছু থেকে থাকে তা হলে দ্রুত জানানো হোক। আমরা ব্যবস্থা নেব।’’ তবে তিনি জানান, কিছু কলেজ থেকে খবর মিলেছে হুমকি, দাপট চালানোর। তবে সে ক্ষেত্রেও কোনও লিখিত অভিযোগ নেই। তাঁর আর্জি, ‘‘বিষয়গুলো লুকিয়ে না রেখে সামনে আনা দরকার। এখন অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’’ অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের উত্তরবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্বে থাকা অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যের সব ক’টি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হুমকি সংস্কৃতি চলছে।’’ টিএমসিপি-র উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ স্কলার সংগঠনের নেতা অয়ন মাহান্তি বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। শিক্ষকদের অনুরোধ করা আর হুমকি দেওয়া এক জিনিস নয়।’’