Jalpaiguri

বাড়ির নকশার অনুমোদনে লক্ষ টাকা ‘ঘুষ’

পুরসভার জুনিয়র বাস্তুকার মধুশ্রী দাস এবং পুরসভা অনুমোদিত সমীক্ষক শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বাড়িতে এসে সে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৩৩
Share:

পুরসভা থেকে বাড়ির নকশা অনুমোদন করাতে এক লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়িতে। পুরসভার কর্মীদের একাংশ এই টাকা নিয়েছেন বলে শুক্রবার জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে শহরের একটি পরিবার। সে অভিযোগে উঠে এসেছে পুরসভার, জুনিয়র বাস্তুকার এবং পুরসভার অনুমোদিত বাড়ি-সমীক্ষকদের নাম। ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল পরিচালিত জলপাইগুড়ি পুর-বোর্ড। শাসক দলকে বিঁধেছে বিরোধীরা। পুলিশ জানায়, অভিযোগ অনুযায়ী, তদন্ত হবে।

Advertisement

এর আগেও বাড়ির নকশা অনুমোদন নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে জলপাইগুড়ি পুরসভা। তা নিয়ে রাজ্যের পুর দফতর থেকে তদন্তের নির্দেশও এসেছিল। সম্প্রতি পুরসভায় কোটি টাকার আর একটি দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছিল। বার বার কেন জলপাইগুড়ি পুরসভায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও।

শহরের ৩ নম্বর গুমটির বাসিন্দা শকুন্তলা দত্ত কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে দাবি করেছেন, গত মে মাসে তাঁর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে দুই কিস্তিতে মোট এক লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে বাড়ির নকশা অনুমোদনের জন্য। পুরসভার জুনিয়র বাস্তুকার মধুশ্রী দাস এবং পুরসভা অনুমোদিত সমীক্ষক শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বাড়িতে এসে সে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ। তবে মে মাসে টাকা নিলেও এখনও পর্যন্ত নকশা তাঁদের হাতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ শকুন্তলা দত্তের। তার পরিবর্তে কম্পিউটারে ছাপানো একটি নকশা শুধু দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। অভিযোগকারিণীর মেয়ে রোশনী মিত্রের দাবি, “টাকা চাইলেই বলা হচ্ছে, বসে আলোচনা করে নাকি হিসেব দেবে। আমরা শুনেছি, আরও কয়েক জন ব্যক্তির থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে।”

Advertisement

পুরসভার নির্মাণ বিভাগের জুনিয়র বাস্তুকার মধুশ্রী এ দিন বলেন, “ওই বৃদ্ধা বাড়ির নকশা অনুমোদন করাতে অফিসে আসেন। আমার কাছে এক সমীক্ষকের নাম জানতে চান। আমি শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিই। আর কিছু জানি না। টাকা-পয়সা লেনদেনের কথা আমার জানার কথা নয়।” অন্য দিকে, শৌভিক সংবাদমাধ্যমকে ফোনে বলেন, “টাকা নেওয়া হয়েছে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য। তার মধ্যেই ভবনের নকশা অনুমোদন করানোর প্রক্রিয়ার জন্যও কিছু ফি ধরা হয়েছে। ওঁরা কাজ শুরু করতে বললেই, কাজ শুরু হবে।” শকুন্তলাদেবীর বক্তব্য, ‘‘পুরসভার অফিসে যাওয়ার পরে, ওঁরা নকশা মঞ্জুর করার জন্য ওই পরিমাণ টাকাই চান। আমি বয়স্ক মানুষ। আর খোঁজ করিনি।’’

প্রশ্ন উঠেছে বাড়ির নকশা অনুমোদন করাতে যেখানে দশ হাজার টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়, সেখানে লক্ষ টাকার লেনদেন কেন?

পুরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল বলেন, “পারিবারিক কারণে সপ্তাহখানেকের বেশি সময় ধরে পুরসভায় যাচ্ছি না। এ বিষয়ে ভাইস চেয়ারম্যান বলতে পারবেন।” ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খোঁজ নিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। পুরসভা কখনও কোনও দুর্নীতিকে বরদাস্ত করেনি, করবেও না।”

জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামীর কটাক্ষ, ‘‘পুরসভায় বহু দিন ধরে দুর্নীতি হচ্ছে। আমরা নিরপেক্ষ কোনও সংস্থাকে দিয়ে এর তদন্ত চাইছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement