সুখিয়াপোখরি ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়া চলছে। নিজস্ব চিত্র
পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে হবে বলে দাবি করেছেন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) প্রধান অনীত থাপা। কিন্তু মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া ঘিরে বুধবার গোলমালের অভিযোগ উঠল পাহাড়ে। অনীত থাপার দলের অন্যতম শীর্ষনেতা তথা জিটিএ সদস্য সতীশ পোখরেলের বিরুদ্ধে এক বিজেপি প্রার্থী এবং তাঁর প্রস্তাবককে মারধর করে মনোনয়ন পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। বিজনবাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। বিকেলে দলের সাংসদ রাজু বিস্তা রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোটের দাবি তুলেছেন সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মুখে এক কথা বলা হচ্ছে। আদতে ঘটছে অন্য। পাহাড়ে ১৪৪ ধারা বলে কিছু নেই। প্রশাসনিক কর্তারা কী করছেন, জানি না। রাজ্যের নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি তুলছি।’’
বিজেপির বক্তব্য, এ দিন সকালে বিজনবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২ নম্বর আসনের জন্য যৌথ গোর্থা মঞ্চের প্রার্থী জীবন ছেত্রী প্রস্তাবকদের নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান। সেখানে ছিলেন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতা তথা জিটিএ সদস্য সতীশ পোখরেল। অভিযোগ, কেন্দ্রের ভিতরেই মনোনয়ন পত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং প্রস্তাবক ও প্রার্থীকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়। চিৎকার-চেঁচামেচিতে লোকজন এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।। সাংসদ বলেন, ‘‘বিডিও এবং পুলিশ মনোনয়ন কেন্দ্রের ভিতরে বাইরের লোকজন আটকাতে ব্যবস্থা নেননি। গুন্ডামি প্রশাসনের সামনেই হয়েছে।’’
এই অভিযোগের পরেই সুখিয়াপোখরি এলাকায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ করে ‘গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’ (জিএনএলএফ)। দলের মুখপাত্র ওয়াই লামার অভিযোগ, মনোনয়ন জমার কেন্দ্রে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে লোকজন ঢুকেছেন। পাহাড়ের শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে ‘কমিউনিস্ট পার্টি অব রেভোলিউশনারি মার্ক্সিস্ট’ (সিপিআরএম)ও। দলের যুগ্ম সম্পাদক শেখর ছেত্রীর অভিযোগ, ‘‘কার্শিয়াং মহকুমার একটি গ্রামের রাস্তা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা আর্থ মুভার দিয়ে মাটি কেটে তৈরি করে দিচ্ছে।’’
আজ, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তার আগে বিভিন্ন মনোনয়ন কেন্দ্রে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ নিয়ে প্রশাসনের তরফে সরকারি ভাবে কোনও বক্তব্য মেলেনি। সতীশ পোখরেলও বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কমিশন অভিযোগ দেখে পদক্ষেপ করবে।’’ দলের সভাপতি অনীত থাপা বলেন, ‘‘আমরা মানুষের সঙ্গে জোট করেছি। বিরোধীরা সুবিধাবাদী জোট করে ময়দানে নেমেছে। ময়দানে নেমে হালে পানি না পেয়ে নানা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ অনীতের বক্তব্য, পাহাড়ে উৎসবের মেজাজে ভোট হবে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জিটিএ ভোটে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পঞ্চায়েত ভোট করিয়ে পূরণ করছি। এ বার পাহাড়ে গ্রামীণ মানুষ নিজেদের উন্নয়ন নিজেরাই করবেন।’’