আগামী শনিবার, ২৫ মার্চ রামনবমী পালনকে ঘিরে শিলিগুড়িতে মুখোমুখি চলে এল তৃণমূল এবং গেরুয়া শিবির।
ওই দিন সকালে শহরের চম্পাসারি এলাকার শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরের মাঠ থেকে শোভাযাত্রার ঘোষণা করেছে তৃণমূল। একই মাঠ থেকে সামান্য কিছু সময়ের ব্যবধানে বার হবে গেরুয়া শিবিরের শোভাযাত্রা। রামনবমীর অনুষ্ঠান কখনওই নিজেদের নামে করে না বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার। তারা এই শোভাযাত্রা ও অনুষ্ঠান করে রামনবমী মহোৎসব সমিতির মাধ্যমে। এ বারেও তারা অন্যথা হবে না। ফেস্টুন, ব্যানার ঝুলিয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছে সমিতি। তাই দেখে তৎপর তৃণমূল নেতারাও। মঙ্গলবার থেকে দলের তরফে বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচার হয়েছে।
পুলিশ কিন্তু কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দু’পক্ষকেই মিছিলের অনুমতি দিয়েছে। দু’তরফই সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে শোভাযাত্রার শুরুর কথা বলেছে। এ দিন অফিসারেরা ঠিক করেছেন, সকাল ১০টা পরে তৃণমূলের শোভাযাত্রা বার হবে।
তার অন্তত ৩০-৪০ মিনিট পরে সমিতির শোভাযাত্রা বার হবে। সমিতির আর একটি শোভাযাত্রা মহানন্দা সেতুর পাশ থেকে শুরু হবে। পরে দু’টি একযোগে শহরে ঘুরবে। সমিতির দাবি, তারা প্রতি বছর নিয়ম করে রামনবমী করে। তবে শাসকদল এই প্রথম বার করবে।
দু’পক্ষই পুলিশকে চম্পাসারি থেকে প্রধাননগর, হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধানরোডে শোভাযাত্রা নিয়ে ঘোরার কথা জানিয়েছে। জমায়েত বা শোভাযাত্রা থেকে গোলমাল, উত্তেজনা এড়াতে সমস্ত রুটে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। মোবাইল ভ্যানের টহলদারিও থাকবে। তেমনিই, দু’টি শোভাযাত্রার জন্য আলাদা ভাবে পুলিশ অফিসারেরা নিযুক্ত হবেন।
এসিপি, ডিসি পদমর্যাদার অফিসারেরা রাস্তায় থাকবেন। পরীক্ষার মরসুম হওয়ায় মাইক বাজানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না কাউকেই। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ভাবে রামনবমী পালনের জন্য যা যা করণীয়, সবই হচ্ছে।’’
মহোৎসব সমিতির অনুষ্ঠানে গেরুয়া শিবিরের শাখা সংগঠনের সদস্যরা ছাড়াও শহরের ব্যবসায়ীদের একাংশ এবং সাধারণ মানুষও যোগ দেন। গত বছর শোভাযাত্রার পরে চাঁদা তুলে অংশগ্রহণকারীদের জন্য খিচুড়ির বন্দোবস্ত করেছিলেন কমিটির সদস্যরা।
সঙ্ঘ পরিবারের উত্তরবঙ্গের সহ-প্রান্ত কার্যবহ তরুণ পণ্ডিত বলেন, ‘‘আমাদের কোনও প্রতিযোগিতা নেই। উৎসবটাই বড়।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, সম্প্রতি কলকাতায় দলের বৈঠক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেক জেলায় রামনবমী পালনের নির্দেশ দেন। এর পরে কী ভাবে রামনবমী পালন হবে, তা নিয়ে জেলার নেতাদের একাধিক বৈঠক হয়। ঠিক হয়, গেরুয়া শিবিরকে নিজেদের শক্তি বোঝাতে চম্পাসারিতেই জমায়েত হবে। জেলার কোর কমিটির সদস্য কৃষ্ণ পাল বলেন, ‘‘কে কী করল, আমাদের জানার দরকার নেই। সমস্ত ধর্মের প্রতি তৃণমূল শ্রদ্ধাশীল।’’
শাসক দলের বক্তব্য শুনে বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা তো এটাই চেয়েছিলাম। সবাই রামনবমী পালনে নামছেন দেখে ভাল লাগছে।’’
শিলিগুড়ির মানুষ অবশ্য অপেক্ষা করে রয়েছেন, রামনবমীর জন্য। তাঁদের আশা, সে দিন শহরের রাজপথ যেন শান্ত থাকে।