সাড়ে তিন দশকের ‘ঐতিহ্য’ ভেঙে ছাত্রী সংসদ নির্বাচনের আবহে তাতছে কোচবিহারের ঠাকুর পঞ্চানন মহিলা মহাবিদ্যালয়। কলেজ সূত্রেই জানা গিয়েছে, আগামী ২০ জানুয়ারি কলেজের ছাত্রী সংসদের নির্বাচনের জন্য প্রথমবার ভোট গ্রহণের দিন ঠিক হয়েছে। বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। সব মিলিয়ে ৩০টি আসনের জন্য মনোনয়ন জমা পড়েছে ৬২টি। যার মধ্যে শাসক দল প্রভাবিতদের পাশাপাশি বিরোধী জোটের প্রার্থীরাও রয়েছেন। ১০ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা পেরনোর পরে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে। যা পরিস্থিতি তাতে বিনা যুদ্ধে মাটি ছাড়তে রাজি নয় কোনও শিবির। ফলে ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত মহিলা বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এ বারই প্রথম ভোট দেবেন, এমন সম্ভবনা বেশি। দীর্ঘ দিনের অলিখিত রীতি ভেঙে ওই নির্বাচনের প্রস্তুতি ঘিরেই চলছে সাজসাজ রব। কোচবিহার ঠাকুর পঞ্চানন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মঞ্জরী বিশ্বাস বলেন, “৩০টি আসনের জন্য ৬২টি মনোনয়ন জমা পড়ছে। নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।” অধ্যক্ষার সংযোজন, ছাত্রীরা আগ্রহী বলেই প্রতিষ্ঠার পর এ বারই প্রথম ভোট হতে চলেছে।
কোচবিহার জেলার ১২টি কলেজে গত কয়েক বছর থেকে ভোট নেওয়া হয়। ছাত্র-ছাত্রী সংসদ দখল নিয়ে শাসক, বিরোধী শিবিরের তো লড়াই থেকে গোলমাল নতুন নয়। একাধিক কলেজে বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যে এসেছে টিএমসিপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও। ওই উত্তেজনার আবহেও কোচবিহারের মহিলা কলেজ থাকত নিস্তরঙ্গ। এবার ভোটের দামামা বেজে ওঠায় সেখানেও উত্তেজনার পারদ চড়ছে। বিক্ষিপ্ত গোলমালের অভিযোগও উঠেছে। ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এক নেতা বলেন, ওই কলেজে একদিকে রয়েছে টিএমসিপি, অন্যদিকে ডিএসও প্রভাবিত মঞ্চ। সরাসরি লড়াইয়ে দুই শিবিরই পরস্পরকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। হতে পারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।
কলেজ সূত্রের খবর, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফি বছর ছাত্রী সংসদের নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হলেই বেশিরভাগ ছাত্রীরা এক যোগে এত দিন অধ্যক্ষার কাছে ভোট চান না বলে আর্জি জানাতেন। ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিচালন সমিতিতে একজন সর্বসম্মত ভাবে প্রতিনিধির নাম চূড়ান্ত করা হত। এ বার মনোনয়ন তোলা শুরু হতেই দেখা যায় নির্বাচন ঘিরে আগ্রহ। ৩০৩টি মনোনয়ন তোলা হয়।