কলেজে লুঙ্গি পরে ঢুকতে বাধা

মঙ্গলবার মেয়ে আফ্রজা বেগমকে নিয়ে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতে বীরপাড়া কলেজে গিয়েছিলেন মাদারিহাটের খিদিরপুর গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক ইসরাফিল হক।

Advertisement

রাজকুমার মোদক

বীরপাড়া শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ১৪:১০
Share:

ক্ষোভ: কলেজে ঢুকতে পাননি ইস্রাফিল। —নিজস্ব চিত্র।

তাঁর পরনে ছিল লুঙ্গি। কারণ সেই পোশাকেই অভ্যস্ত তিনি। এই পোশাক পরেই প্রতিদিন ভ্যান চালিয়ে ঘুরে বেড়ান। কিন্তু মেয়ের কলেজে দেখা করতে গেলে যে ওই পোশাকে ঢোকা যাবে না, এমনটা আঁচ করতে পারেননি। কিন্তু দরকার বড় বালাই। শেষপর্যন্ত বা়ড়ি থেকে প্যান্ট আনিয়ে সর্বসমক্ষে পোশাক পরিবর্তন করে তবেই কলেজে ঢোকার ছাড়পত্র পেলেন ওই ভ্যানচালক। নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘটেছে বীরপাড়া কলেজে।

Advertisement

মঙ্গলবার মেয়ে আফ্রজা বেগমকে নিয়ে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতে বীরপাড়া কলেজে গিয়েছিলেন মাদারিহাটের খিদিরপুর গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক ইসরাফিল হক। অভিযোগ, লুঙ্গি পরে তাকে কলেজে ঢুকতে বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষী গৌতম পাল। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েকে নিয়ে কলেজে ঢুকতে গেলে দারোয়ান বলেন লুঙ্গি পরে কলেজে ঢোকার নিয়ম নেই। অনেক অনুরোধেও আমায় ঢুকতে দেননি। পরে বাড়িতে খবর পাঠিয়ে প্যান্ট আনিয়ে, গেটের সামনেই পোশাক পাল্টে ভিতরে ঢোকার অনুমতি পাই।” আফ্রজা বলেন, ‘‘আমি নতুন ভর্তি হয়েছি, তাই কলেজের নিয়মকানুন কিছু জানা ছিল না। এই ঘটনায় আমি খুব লজ্জা পেয়েছি।” তবে ওই নিরাপত্তা রক্ষী গৌতম পালের বক্তব্য, ‘‘ওনার লুঙ্গি ছেঁড়া ছিল। তাই পাল্টে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু লুঙ্গি পরে কলেজে ঢোকা যাবে না এমন কিছু বলিনি।’’

মঙ্গলবার রাতে ঘটনার কথা সাংবাদিকদের কাছে প্রথম জানতে পারেন বীরপাড়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শ্যামসুন্দর প্রধান। কলেজে অভিভাবকদের জন্য কোনও পোশাক বিধি নেই বলে জানান তিনি। তাঁর কথায় “কোনও ভাবে ঘটনার কথা জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতাম। যে কেউ শালীনতা রক্ষা করে যে কোন পোশাক পরে কলেজে আসতে পারেন। নিরাপত্তা রক্ষী অন্যায় কাজ করেছেন। এই ঘটনার জন্য আমি লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement