প্রতীকী ছবি।
গত তিন দিনে জলপাইগুড়িতে ১৭২ জন নতুন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। শিলিগুড়িতে সম্প্রতি ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গত দু’বছরের রেকর্ডকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরেরই বক্তব্য, শিলিগুড়িতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃহস্পতিবারই ১৫২০ জনে দাঁড়িয়েছে। সেখানে জলপাইগুড়িরও এমন অবস্থা দেখে চিন্তায় পড়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁরা ঠিক করেছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের অবস্থা দেখা হবে। যদি দেখা যায়, কারও মশারি নেই, তা হলে তাঁকে মশারি দেওয়া হবে। জ্বরে আক্রান্তরা যাতে মশারির নীচে থাকেন, তা দেখতে আশা কর্মী সহ বিভিন্ন সমীক্ষাকারীরা নজরদারি চালাবেন।
শুক্রবার জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের দফতরে ডেঙ্গি নিয়ে বিশেষ বৈঠক ছিল। জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার ছাড়াও দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক, ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং পুরসভার প্রতিনিধিরা ছিলেন। বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দেয়, বর্ষার পর থেকে জেলায় ডেঙ্গি সংক্রমণের প্রবণতা করা কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। রোগের প্রকোপ বেড়েই চলছে। তার প্রমাণ গত মঙ্গলবার পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০১৪। শুক্রবার বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতর জানায় আক্রান্তের সংখ্যা ১১৮৬। অর্থাৎ, গত তিন দিনে ১৭২ জন আক্রান্তের রিপোর্ট মিলেছে।
রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোগীদের মশারির নীচে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। রোগের সংক্রমণ রুখতে এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, মশারি বিলি হবে। রোগের প্রকোপ চলা এলাকায় সকলের যাতে একটি করে মশারি থাকে নিশ্চিত করবে স্বাস্থ্য দফতর।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি অবশ্য জেলা জুড়ে রোগের প্রকোপ বাড়ছে তা মানতে চাননি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বললেন, “আমরা ভেবে দেখলাম, রোগীদের মশারির নীচে রেখেই আপাতত রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক রোগীর থেকে যাতে অন্য রোগী সংক্রমিত না হয়। আমরা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করে দেখব, কার মশারি নেই, যার নেই তাঁকেই মশারি দেওয়া হবে।”
জেলার ডেঙ্গি মানচিত্রে মালবাজার, মেটেলি এবং নাগরাকাটা এগিয়ে রয়েছে। এলাকার চা বাগানগুলি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে প্রশাসন। বেশ কিছু চা বাগানের কারখানার বড় অংশ জুড়ে ডেঙ্গির মশার আঁতুড় তৈরি হয়েছে বলে দাবি। চা বাগানের কারখানার ভেতরে প্রশাসন সরাসরি ঢুকতে পারে না।