—প্রতীকী চিত্র।
মনোনয়ন ঘিরে গুলি চলার অভিযোগ ওঠে চোপড়ায়। উত্তর দিনাজপুর জেলার ওই ব্লকে জেলা পরিষদের দু’টি আসনে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২১৭টি আসন এবং পঞ্চায়েত সমিতির ২৮টি আসনেও বিরোধী কোনও প্রার্থী নেই। চোপড়ার বিডিও সমীর মণ্ডল জানান, চোপড়া থানার হাপতিয়াগছ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি আসনে নির্দল এক জন প্রার্থী রয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে দু’জন প্রার্থী তৃণমূলের নামে দাঁড়িয়েছেন। এর বাইরে, কোথাও দল বদল, কোথাও আবার চলল ধর্না, বিক্ষোভ। শুক্রবার পঞ্চায়েতের মনোনয়ন ঘিরে শাসক-বিরোধী শিবিরে এমনই ছবি দেখা গেল মালদহ ও দুই দিনাজপুরে। মনোনয়নকে ঘিরে ক্ষোভ, বিক্ষোভ, ‘গোঁজের’ প্রভাব পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে শাসক এবং বিরোধী—সব পক্ষই। যদিও মুখে নেতা-নেত্রীরা বলছেন, ক্ষোভ-বিক্ষোভের কোনও প্রভাব ভোটে পড়বে না।
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মালদহ ও দুই দিনাজপুরের ব্লক অফিসগুলিতে মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়ার কাজ হয়েছে, দাবি প্রশাসনের। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতেই তিন জেলাতেই ঢালাও মনোনয়ন পত্র জমা পড়েছে। মনোনয়ন জমার ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও আবার শাসক শিবিরকেও ছাপিয়ে গিয়েছে বিরোধীরা। তবে, মনোনয়নে দ্বন্দ্বের ছবিটাও জেলায় জেলায় প্রকাশ্যে এসেছে। মালদহের গাজলের মাঝরা গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সমিতির ৩৮ নম্বর আসনে তৃণমূল প্রার্থী দেয়। সে আসনে প্রার্থী হিসেবে নাম ছিল ব্লকের যুব সভাপতি উপেন রায়ের। অভিযোগ, তাঁকে ব্লক সভাপতি দীনেশ টুডু সময় মতো না জানানোয়, ব্লক অফিসে গিয়েও তিনি মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। প্রার্থী হতে না পেরে, এ দিন কান্নায় ভেঙে পড়েন হবিবপুরের আইহোর প্রধান অনিতা সাহা। চাঁচলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে ব্লক অফিসের সামনে ধর্না-বিক্ষোভ করেন কংগ্রেসের নেতা, কর্মীরা। অভিযোগ, ওবিসি হলেও আবেদন করার পরেও, প্রশাসন শংসাপত্র দিতে গড়িমসি করছে। এরই মধ্যে মালদহের কালিয়াচকের মোজমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০টি আসনেই বিরোধীদের কোনও প্রার্থী নেই। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনেও বিরোধীদের কোনও প্রার্থী নেই। সে সব আসনে শুধুই তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছে।
পঞ্চায়েতের টিকিট বিলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল নেতা গৌতম দাস। টিকিট না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদায়ী সভাধিপতি ললিতা টিজ্ঞাও। গৌতম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে এমন কিছু মানুষকে টিকিট দেওয়া হয়েছে, যাঁরা বিজেপিতে গিয়েছিলেন এবং বিজেপির হয়ে কাজও করেছেন। তাই ক্ষোভ এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, বাড়ি থেকে বেরোনোই যাচ্ছে না।’’ তাই তৃণমূল প্রার্থীদের প্রচারে তিনি থাকবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন গৌতম।
উত্তর দিনাজপুরে আবার বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনে ধর্নায় বসেন দলের জেলার সহ-সভাপতি বীণা ঝা। অভিযোগ, তাঁকে টিকিট না দিয়ে সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা অন্য এক জনকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। বীণা বলেন, ‘‘প্রার্থী করা নিয়ে দলের জেলা নেতৃত্বের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার লড়াই চলবে। আমাকে টিকিট না দেওয়া পর্যন্ত আমি আন্দোলন থেকে সরছি না।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের বক্তব্য, ‘‘বীণাদির অভিযোগ ভিত্তিহীন। কাকে টিকিট দেওয়া হবে, তা দল সিদ্ধান্ত নেবে। উনি পাগলামি করছেন।’’