বছর দুয়েক আগে চিনে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়া তাবড় রাষ্ট্রপ্রধানদের গ্রিন টি দিয়ে আপ্যায়ন করেছিল চিনের প্রশাসন। বিশ্বের গ্রিন টিয়ের বাজারে চিনের একছত্র অধিকার। এ বার সেই দেশেই দিনদিন বাড়ছে সিটিসি চায়ের চাহিদা। তার জন্যই শুক্রবার চিন থেকে জলপাইগুড়ি এসেছিলেন একটি আন্তর্জাতিক চা বিপণন সংস্থার দুই কর্তা। উৎপাদন খরচ তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ায় ছোট চা বাগানের পাতায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
শুক্রবার জলপাইগুড়ির রানিনগরে ক্ষুদ্র চা চাষিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। চিনের চা বিপণন সংস্থার দুই প্রতিনিধি ঝিয়াও উু এবং বিং ঝিয়া গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার সকালেই তাঁদের দার্জিলিং যাওয়ার কথা ছিল। যাওয়ার আগে জলপাইগুড়ির ছোট বাগানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। ঝিয়াও উু বলেন, “দার্জিলিং চায়ের ভাল চাহিদা রয়েছে আমাদের দেশে। মাস কয়েক আগে আমাদের দেশের একটি সভায় এখানকার (উত্তরবঙ্গ) প্রতিনিধিরা চা নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই চা আমাদের ভাল লেগেছে, তাই এসেছি।” চিনে সিটিসি চায়ের চাহিদা বাড়ছে বলে জানান বিং ঝিয়া। তিনি বলেন, “চিনের যুব সমাজ গ্রিন টি খেতে চাইছে না। তাঁরা সিটিসি চায়ের দিকে ঝুঁকছে।’’
গত বছর থেকে চিনে সিটিসি চা পাঠাতে শুরু করেছে ভারত। আগামী দিনে চিনে রফতানির পরিমাণ আরও বাড়াতে আগ্রহী চা পর্ষদ। পর্ষদ সূত্রের খবর, অসম ও দক্ষিণ ভারতের থেকে উত্তরবঙ্গে চায়ের উৎপাদন খরচ কম বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। সে কারণেই চিনের প্রতিনিধিরা আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে তাঁদের দাবি। এ দিন রানিনগরের একটি হোটেলের সভাঘরে বৈঠকে নানা ধরণের চায়ে চুমুক দেন চিনের চা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
এ দিনের অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন সিস্টা-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী ও চা পর্ষদের কর্তারা ছিলেন। পর্ষদের জলপাইগুড়ি দফতরের উপ অধিকর্তা চন্দ্রশেখর মৈত্র বলেন, “চিনের চা গাছের পাতা তুলনামুলক মোটা। তাই সিটিসি পদ্ধতিতে গুঁড়ো চা বানালে তার গুণমান যথাযথ হয় না। সেদিক থেকে ভারতের বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের চা পাতার মান ভাল।”
এ দিন চা পাতার নানা নমুনা সংগ্রহ করেছেন চিনের প্রতিনিধিরা, কী ভাবে চাষ হয় তাও শুনেছেন। খোঁজ নিয়েছেন কীটনাশকের ব্যবহার নিয়েও। সব দিক ঠিক থাকলে চিনের ওই সংস্থা চুক্তি করবে বলে জানিয়েছে।