সূচনা: বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে ট্রেনলাইন সম্প্রসারণের জন্য কাটা হল কাঁটাতারের বেড়া। রবিবার, হলদিবাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
লাইন সম্প্রসারণের জন্য কাটা হল কাঁটাতারের বেড়া। রবিবার সকালে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাজ শুরু করল রেল দফতর। সূত্রের খবর, এ দিন ৭৮২/২ এস আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলারের কাছে ১৫ মিটার কাঁটাতারের বেড়া কেটে ফেলা হয়। এই ১৫ মিটার জায়গা দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে পাতা হবে রেললাইন। সেখানেই ভারতীয় রেল তৈরি করবে গেট। সাড়ে ছয় মিটার উঁচু ওই গেটের উপর দিয়ে থাকবে কাঁটাতারের বেড়া। ১৫ মিটারের মধ্যে রেললাইন পাতার জন্য বরাদ্দ থাকবে ১০ মিটার। আর ৫ মিটার জায়গা থাকবে সীমান্তরক্ষীদের যাতায়াতের জন্য। বাংলাদেশের রেললাইনের সঙ্গে ভারতের রেলপথ যুক্ত করতে ২০০ মিটার রেললাইন পাতার কাজ করতে হবে। নো-ম্যানস ল্যান্ডের দিকে ১৫০ মিটার ও কাঁটাতারের এ পারে ৫০ মিটার রেলপথ তৈরি করলেই যুক্ত হবে ভারত-বাংলাদেশের এই রেলপথ। ২০০ মিটার রেলপথ তৈরির কাজ ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে ভারতীয় রেল সূত্রের খবর।
১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান তৈরি হলেও পূর্ব পাকিস্তান ও ভারতের যোগাযোগে জন্য উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রাচীন এই রেলপথটি ব্যবহার করা হত। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় থেকে এই পথটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। তখন কলকাতা থেকে ট্রেন ছেড়ে বর্তমান বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি স্টেশন হয়ে পৌঁছত শিলিগুড়ি।ছিটমহল বিনিময় চুক্তির পরে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের সরকার ঐতিহ্যবাহী এই রেলপথ পুনরায় চালু করতে উদ্যোগী হয়। এর পরেই হলদিবাড়িতে গড়ে ওঠে আন্তর্জাতিক মানের রেলস্টেশন। পাতা হয় ৩.৩৪ কিমি রেললাইন। সে ভাবেই বাংলাদেশের নীলফামারি জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্টেশনকে নতুন করে গড়ে তোলা হয়। চিলাহাটি থেকে ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত ৬.৭২৪ কিমি রেলপথ নির্মাণ হয়।
গত ২৯ অগস্ট চিলাহাটির জ়িরো পয়েন্টে ভারত-বাংলাদেশ সংযোগকারী রেলপথের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশের রেলপথমন্ত্রী মহম্মদ নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৬ মার্চ আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিনের বন্ধ হয়ে থাকা ওই রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করবেন। প্রস্তুতি শুরু করে দুই দেশের রেল দফতর। বাংলাদেশ তাদের সীমানা পর্যন্ত রেললাইন পাতার কাজ শেষ করলেও সীমান্তে কাঁটাতারের জন্য ভারতের দিকে মাত্র ২০০ মিটার রেললাইন পাতার কাজ বাকি থেকে যায়। সেই কাজই শুরু হল রবিবার।উত্তর-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘বাকি অংশের কাজ ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। তবে, কবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু করবে তা এখনিই বলা সম্ভব নয়।’’