প্রতীকী ছবি।
দশ লক্ষ মার্কিন ডলারের একটি নোট উদ্ধার হল শিলিগুড়িতে। শনিবার রাতে ভক্তিনগর থানার উল্টো দিকে একটি হোটেল থেকে ওই নোট উদ্ধার হয়। ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে অসমের দুই যুবককে। ধৃতরা হলেন অসমের বোরালিমারা এলাকার মৃগাঙ্করঞ্জন বসু এবং উত্তর লখিমপুরের মমু দত্ত। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পূর্ব) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নোটটি আসল না নকল, তা যাচাই করার জন্য সিআইডি অফিসারদের ডাকা হয়েছে।’’
সিআইডি সূত্রে দাবি, নোটটি মার্কিন ফেডারাল ব্যাঙ্কের ছাপা নয়। ‘আমেরিকান ব্যাঙ্ক নোট কোম্পানি’ নামে একটি সংস্থা ১৯৮৮ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ মিলিওনিয়ার’ বলে একটি সংগঠনের সদস্যদের সংগ্রহে রাখার সামগ্রী হিসেবে সেটি ছেপেছিল। কোনওভাবে তা জোগাড় করে বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দাকে প্রতারণা করার ফাঁদ পাতা হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা। সিআইডির দাবি, নোটটি জাল না হলেও হস্তান্তর বা লেনদেনযোগ্য নয়, তাই মূল্যহীন। নোটটির সঙ্গে একটি শংসাপত্র এবং একটি ধাতব ব্লক উদ্ধার হয়েছে। শংসাপত্রে নোটটিকে আসল বলে দাবি করা হয়েছে বলে সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। এক গোয়েন্দা বলেন, ‘‘মার্কিন ডলার ছাপে আমেরিকার ফেডারাল ব্যাঙ্ক। সেই নোটের লেনদেনে আলাদা কোনও শংসাপত্র দরকার হয় না। কিন্তু এক মিলিয়ন ডলারের একটি নোট বাজারে চালাতে গেলে লোকে সন্দেহ করতে পারে, তাই সেটি আসল এবং লেনদেনযোগ্য বলে ক্রেতার কাছে দাবি করেছিল প্রতারক ওই দুই যুবক।’’ সেই দাবির স্বপক্ষে শংসাপত্রও দেখানো হত।
পুলিশ জানায়, এমন প্রতারণা চক্রের হদিশ পেয়ে ওই দুই যুবকের অপেক্ষায় ছিলেন তারা। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জেরায় ধৃতরা জানিয়েছেন, শিলিগুড়িতে কোনও এক ব্যক্তিকে সেই নোট ৪ কোটি টাকায় বিক্রির রফা হয়েছিল। তদন্তের স্বার্থে ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ্যে আনতে চায়নি পুলিশ। এমনিতে দশ লক্ষ মার্কিন ডলারের দাম ভারতীয় মুদ্রায় ৭ কোটি টাকার আশেপাশে। পুলিশের দাবি, ক্রেতাকে ভুল বুঝিয়ে কম টাকায় সেটি বিক্রির টোপ দেওয়া হয়েছিল। প্রতারণা এবং জালিয়াতির অভিযোগে ওই দুই অভিযুক্তকে এ দিন জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়েছিল।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ২০০৯ সালে দিল্লিতে, ২০১৫ সালে ধুবড়িতে এবং ২০১৭ সালে হায়দরাবাদেও একইরকম সামগ্রীর সঙ্গে কিছু প্রতারক ধরা পড়েছিল।