প্রতীকী ছবি।
জেলায় যে তিনটি এলাকাকে সাংগঠনিক সভা করার জন্য বেছেছেন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী, তার মধ্যে দুটিই পর্যটন বলয়ে উল্লেখ্যযোগ্য। মালবাজার এবং চালসা। বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এলে জেলা সদরে সাধারণত একটি সাংগঠনিক সভা বা বৈঠক থাকে। কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ পটেলের ক্ষেত্রে সে রীতি মানা হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, পর্যটনমন্ত্রীর সভাস্থল হিসেবে পর্যটন কেন্দ্র বেছে নেওয়া কি নেহাতই কাকতালীয়?
বিজেপি সূত্র জানাচ্ছে, দলীয় কর্মসূচির ফাঁকে ফাঁকে পর্যটনমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের বহু ট্যুর অপারেটর, রিসর্ট ব্যবসায়ী, রিসর্ট কর্মী সংগঠন থেকে শুরু করে নানা পর্যটন সংগঠনের সঙ্গে দেখা করবেন। তাঁদের সঙ্গে ভবিষ্যতে উত্তরবঙ্গের পর্যটন সম্ভাবনা নিয়ে প্রস্তাব শুনবেন বলেও খবর। এই বৈঠকগুলির বেশিরভাগই বিকেলের পর থেকে হবে। বুধবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি থেকে কয়েক জন বড় মাপের পর্যটন ব্যবসায়ীর চালসা গিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলেও স্থির হয়েছে।
বিজেপি সূত্রের খবর, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার বড় অংশের বাসিন্দা যুক্ত। এত দিন তাঁদের নেহাতই সাধারণ ভোটদাতা হিসেবে ধরা হত। বিজেপির দাবি, পর্যটনকে আলাদা ক্ষেত্র হিসেবে ধরলে সেই ক্ষেত্রের আওতায় থাকা ভোটদাতার সংখ্যা বিপুল। এই ক্ষেত্রটিকেও ভোটের অঙ্কে বিচার করছে বিজেপি। সূত্রের খবর, এই পরিকল্পনা সঙ্ঘের। ডুয়ার্সের বহু এলাকায় সঙ্ঘের কার্যকর্তারা বাসিন্দাদের উৎসাহ দিয়ে হোম-স্টে তৈরি করিয়েছেন বলে খবর। ওই বাসিন্দারা এখন আয়ের মুখ দেখছেন। তাঁরা সঙ্ঘের কার্যকর্তাদের কাছে কৃতজ্ঞ বলেও দাবি বিজেপি সূত্রে। এ বার সঙ্ঘের নির্দেশেই সেই সব হোম স্টে-র মালিক থেকে বড় ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে পর্যটনমন্ত্রীর দেখা করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর কথায়, “পর্যটনমন্ত্রী সাংগঠনিক কাজেই জলপাইগুড়িতে এসেছেন। ভুললে চলবে না, তিনি পর্যটনমন্ত্রী এবং জলপাইগুড়ি পর্যটনের জায়গা। তাই পর্যটন নিয়ে তিনি উৎসাহী হবেন, এটাই স্বাভাবিক।”
মালবাজারে গিয়ে পর্যটনমন্ত্রী রাজ্যকে নিশানা করেছেন। সেই একই অভিযোগ তিনি উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে বৈঠকেও জানাবেন বলে খবর। সঙ্গে থাকবে নতুন আশ্বাসও। জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “তৃণমূল সরকার পর্যটন নিয়ে গত দশ বছরে যা করেছে স্বাধীনতার পরের এত বছরেও তা হয়নি। বিজেপির মন্ত্রীরা এসে যতই বোকা বানানোর চেষ্টা করুন, মানুষ ভুলবে না।”
সূত্রের খবর, একাধিক জনজাতি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদেরও বৈঠকে ডেকেছেন প্রহ্লাদ। তাঁদের দাবিদাওয়াও শুনবেন। এই তালিকায় আদিবাসী থেকে পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায় রয়েছে বলে খবর।
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘বিজেপি একটা মিথ্যেবাদী পার্টি। ভোটের আগে চমক দিতে ওই দলের মন্ত্রী এই সব ভাঁওতা দিচ্ছেন। উনি জানেন না, আমরা অনেক দিন আগে থেকেই হোম স্টের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করে চলছি। হোম স্টের আরও উন্নতিও রাজ্যের পর্যটন দফতর করছে। তা ছাড়া রাজ্যকে এড়িয়ে কেন্দ্র এ ধরনের কাজ করতেও পারে না।’’