প্রতীকী ছবি।
পাহাড়ে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। বিশেষ করে কালিম্পং জেলায়। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন সংক্রমণ বাড়ছে, তা দেখে ব্যবস্থা নিতে বুধবার উত্তরকন্যার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে নির্দেশ দেন তিনি। জেলাশাসক আর বিমলা নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন তিনি সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, ‘‘কালিম্পং একদিকে অবস্থিত। তা-ও সেখানে সংক্রমণ বাড়ছে কেন? ভুটান, সিকিমের উপর দোষ দিলে চলবে না। ব্যবসার কারণে যদি বাইরে থেকে লোক আসে, তা হলে টেস্টিং, ট্রেসিং করুন।’’ জেলাশাসক জানান, তাঁরা তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত চিহ্নিত করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ যেখানে হচ্ছে সেটা চিহ্নিত করা শুধু নয়। যেখানে হচ্ছে না সেখানে যাতে না হয় সেটা দেখুন।’’ জেলায় আক্রান্ত দ্রুত বেড়ে এক হাজার ছুঁতে চলেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর কথা শিলিগুড়ি খুবই ‘বিপদের মধ্যে’। অনেকগুলি সীমান্ত রয়েছে। তা ছাড়া প্রতিবেশী ৮টি রাজ্যের গেটওয়ে। সে কারণে শিলিগুড়ির বিষয়টি নজরে রাখতে বলেন। মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘কালিম্পঙে পজ়িটিভিটি বাড়ছে। তবে দার্জিলিঙে কমছে। শিলিগুড়িতেও কমছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ। কোচবিহারে একই অবস্থায় রয়েছে। কালিম্পঙের ৩টি ব্লক কালিম্পং-১, কালিম্পং-২ এবং গরুবাথানে কোনও করোনা আক্রান্ত নেই। জেলাশাসককে দেখতে হবে যাতে নতুন করে কোনও সংক্রমণ না ঘটে। কোচবিহারে ৫টি ব্লক, ৩২ টি গ্রাম পঞ্চায়েত সংক্রমণ কম। ব্লকগুলি হলদিবাড়ি, সিতাই, শীলতখুচি, তুফানগঞ্জ-১, মেখলিগঞ্জ। এখানে যেন না ছড়ায় দেখতে হবে। খুব সাবধানে থাকতে হবে। দার্জিলিঙে মিরিক, রঙলি-রঙলিওট এবং মিরিক পুরসভা এলাকায় করোনা নিয়ন্ত্রণে করা সম্ভব হয়েছে।’’
সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার জন্য অনগ্রসর কল্যাণ মন্ত্রী বিনয় বর্মণ কোচবিহার থেকে এ দিন বৈঠকে থাকতে পারেননি। শারীরিক অসুস্থতার জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও উপস্থিত থাকতে পারেননি। বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন সুস্থ। এ দিন বৈঠকেও ছিলেন। কোচবিহারে সংক্রমণ বাড়ছে বলেই অভিযোগ। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় করোনা আক্রান্তদের মাঝেমধ্যেই শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতালে রেফার করতে হচ্ছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব রয়েছে বলেই অভিযোগ। এদিন শিলিগুড়িতে করোনার সংক্রমণ নিয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে দুই জন কোচবিহারের বাসিন্দা। বাকিদের মধ্যে একজন ডুয়ার্সের বানারহাটের এবং অপরজন ভক্তিনগর এলাকার বাসিন্দা।
সামনে পুজো নিয়ে তাই সকলেই চিন্তিত। মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বারবার বলেছি, অধৈর্য্য হলে চলবে না। সংক্রমণ কমে গিয়েছে বলে ছেড়ে দিলে চলবে না। অনেক দিন কাজ করলে ক্লান্তি আসে। কিন্তু সামনে বড় চ্যালেঞ্জ পুজো।’’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পুজোর দিন আসছে, দেওয়ালি থেকে ছট পুজো সব ক্ষেত্রেই সাবধান হতে হবে। মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করে স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। এক সঙ্গে এক লক্ষ লোক জমায়েত হলে সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই ছোট ছোট দল করে যেতে হবে। এককাট্টা যাতে না হয়।’’ তিনি জানান, ভিড় কমাতে তৃতীয়া থেকে পুজো দেখা যাবে। লক্ষ্মীপুজোর আগে পর্যন্ত বিসর্জন চারদিন। কবে কোন এলাকার বিসর্জন হবে পুলিশ ঠিক করে দেবে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)