জলাজমিতে মাটি ফেলে অবাধে চাতরা বিল ভরাট করে চলছে নির্মাণ কাজও, অভিযোগ মালদহে। ছবি: স্বরূপ সাহা
মালদহের জলাজমি (চাতরা বিল) ভরাটের অভিযোগে এ বার মামলা হল পরিবেশ আদালতে। শুক্রবার রাজ্যের পরিবেশ আদালতে মামলাটি করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সপ্তাহখানেকের মধ্যে চাতরা বিল ভরাটের মামলার শুনানি হবে বলে জানান তিনি। শনিবার তিনি বলেন, “চাতরা বিল ভরাট এখনই বন্ধ না হলে শহর জলে ভাসবে। পরিবেশের ভারসাম্যতেও প্রভাব পড়বে।” পরিবেশ আদালতে চাতরা বিল ভরাট নিয়ে মামলা নিয়ে স্বস্তিতে শহরবাসী।
সম্প্রতি ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিককে সঙ্গে নিয়ে চাতরা বিল সংলগ্ন শহরের একাধিক ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তিনি বলেন, “জলাজমি ভরাটে পুরসভার ভূমিকা নেই। ভূমি সংস্কার ও প্রশাসনের কর্তারা বিষয়টি দেখছেন। তাঁদের সব রকম সহযোগিতা করা হবে বলে পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলরের বৈঠকেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
দেড়শো বছরের পুরনো ইংরেজবাজার পুরসভার মধ্যেই রয়েছে চাতরা বিল। শহরবাসীর দাবি, বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশির জল চাতরা বিলে গিয়ে পড়ে। সে বিল নিয়েই দেদার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, জমি-মাফিয়ারা পুরসভা, প্রশাসনের একাংশের মদতে বেআইনি ভাবে মাটি ফেলে দেদার বিল ভরাটের কারবার চালাচ্ছে। সে জমিই আবার ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা কাঠা করে বিক্রি হচ্ছে। সে জমিতেই গড়ে উঠছে ঝাঁ চকচকে বাড়িও। পুরসভার তরফে রাস্তা, পানীয় জল, নিকাশি নালাও গড়ে তোলা হচ্ছে। জলাশয়ের মধ্যে কী ভাবে বাড়ি তৈরির অনুমতি দিচ্ছে পুরসভা, উঠছে প্রশ্ন।
২১ ফেব্রুয়ারি শহরের চাতরা বিল সরেজমিনে ঘুরে দেখেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সে সময়ই পরিবেশ আদালতে মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, ৫২ পাতার রিপোর্ট আদালতে তিনি জমা দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, সে রিপোর্টে ২০০৫ সালে চাতরা বিলের পরিমাণ ছিল ৪০৭ হেক্টর। এখন সে বিলই মাত্র ১৯৬ হেক্টর আছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “চাতরা বিলের পরিমাণ দেখলেই স্পষ্ট হবে কী ভাবে জলাশয়টি ভরাট হয়েছে।”
যদিও পরিবেশ আদালতে মামলা নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে নারাজ প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের দাবি, জলাজমি ভরাট রুখতে ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করা হয়েছে।