—ফাইল চিত্র।
গত দেড় বছরে উত্তর দিনাজপুর জেলায় মোটরবাইক ও ছোট চার চাকার গাড়ির বিক্রি বেশ পড়েছে। জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত জেলায় মোটরবাইক ও চার চাকার গাড়ির বিক্রি ২০ শতাংশ কমেছে। জেলার বিভিন্ন বাইক ও চার চাকার
কেন বিক্রি কমছে?
শো-রুম কর্তৃপক্ষের একটি অংশের দাবি, বাইক ও চার চাকার গাড়ি কেনার জন্য বিভিন্ন ঋণদানকারী সংস্থা সুদের বিনিময়ে বাসিন্দাদের ঋণ দেওয়ার জন্য সারা বছর মুখিয়ে থাকে। কিন্তু গত দু’বছরে বিভিন্ন কোম্পানির বাইক ও চার চাকার গাড়ির দাম ৭ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সেই কারণে, বাইক ও চার চাকার গাড়ি বিক্রি কমে গিয়েছে। তা ছাড়া, গত তিন বছরে বিভিন্ন ঋণদানকারী সংস্থা সুদের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার কারণেও অনেকে সেইসব সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে বাইক ও ছোটগাড়ি কিনতে চাইছেন না।
আরও একটি কারণ হল, ২০১৬ সালের নভেম্বরে নোটবন্দির পর থেকে বেশির ভাগ বাসিন্দা হাতে নগদ টাকা রাখছেন না। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের অনলাইন পেমেন্ট কিমবা চেকের মাধ্যমে বাইক ও চারচাকার গাড়ির দাম মেটাতে হচ্ছে। এ সব জটিলতার কারণে ধীরে ধীরে বাইক ও চারচাকার বিক্রি কমছে।
রায়গঞ্জের শিলিগুড়িমোড় এলাকার একটি বাইকের শোরুমের ম্যানেজার সোমনাথ সিংহের বক্তব্য, গত এক বছরে জেলায় বাইক বিক্রি যথেষ্ট কমেছে। অথচ চাহিদা যে নেই তা নয়। তাঁর কথায়, জিএসটি-র ভারেও গাড়ি বিক্রি কমছে।
জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত জেলায় ৩০ হাজার মোটরবাইক ও প্রায় ৪০টি চার চাকার গাড়ি বিক্রি হয়েছে। সেই হিসেব অনুযায়ী, প্রতি মাসে গড়ে ২৫০০ করে বাইক ও তিনটিরও বেশি করে চারচাকা গাড়ি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত জেলায় ২৪ হাজার বাইক ও মাত্র ২৫টি চারচাকার গাড়ি বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ, ওই আর্থিক বছরে প্রতি মাসে গড়ে দু’হাজার করে বাইক ও দু’টি করে চার চাকার গাড়ি বিক্রি হয়েছে। সোমনাথের কথায়, চলতি বছরের গত এপ্রিল থেকে অগস্ট মাস পর্যন্ত জেলায় প্রতিমাসে গড়ে ১৯০০ থেকে দু’হাজারের বেশি বাইক বিক্রি হচ্ছে না। সেই হিসেবে গত দেড় বছরে প্রতিমাসে বিক্রির পরিমাণ প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ কমেছে। রায়গঞ্জের কলেজপাড়া এলাকার একটি চারচাকার গাড়ির শোরুমের কর্মীরা জানিয়েছেন, জেলায় বিভিন্ন নামী কোম্পানির চারচাকার শোরুম নেই। সেই কারণেও জেলায় গাড়ি বিক্রির পরিমাণ কমছে বলে মনে হচ্ছে।
কিছু মানুষের বক্তব্য, গাড়ির সার্ভিসিং বা গাড়ি কেনার পরে তা মেরামতির খরচও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে, তাতেও অনেকে গাড়ি কেনার কথা আর ভাবছেন না।