—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কোনও পড়ুয়াকে যেন মাটিতে বসতে না হয়। জলপাইগুড়ির সদর প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে জেলা প্রশাসনের তাবড় আধিকারিকদের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে তেমনই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিলেন তিনি। সদর প্রাথমিক স্কুলের কিছুটা দূরেই শিশুমহল স্কুলে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির জন্য যৌথ পরিদর্শনের নির্দেশও দিয়েছেন। সূত্রের খবর, বিচারপতি বৈঠকে জানিয়েছেন, তিনি ফের বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যেতে পারেন। তখন যেন সব ঠিকঠাক চলছে, তা দেখতে পান।
গত শুক্রবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু হঠাৎ সদর প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে পড়ুয়াদের বসার স্থান সঙ্কুলান না হওয়া, ঘরের রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়া, মিডডে মিলের ঘরের অপরিষ্কার থাকা, পানীয় জলের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকা, সিসি ক্যামেরা যথাযথ ভাবে না বসানো, এক সঙ্গে একাধিক শিক্ষকের অনুপস্থিত থাকার মতো বিষয় বিচারপতির পরিদর্শনে উঠে আসে। বিশেষত, প্রায় তেরোশো পড়ুয়ার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্লাসঘর না থাকা নিয়ে বিচারপতি উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন বলে সূত্রের খবর।
এ দিন সদর প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, সুনীতিবালা সদর বালিকা বিদ্যালয়ের (উচ্চ বিদ্যালয়) কর্তৃপক্ষ এবং জেলার শিক্ষা প্রশাসনকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি। বিচারপতি বসু বর্তমানে কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলা শুনছেন। এ দিন বিচারপতির চেম্বারে বৈঠকে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক দুই স্কুল পরিদর্শকও ছিলেন। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় বলেন, “খুবই ভাল আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কথাও উঠেছিল। বিচারপতি সেটি বিবেচনা করে দেখতে বলেছেন। আমরা দেখছি।” জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বালিকা গোলে বলেন, “শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”
বিচারপতির পরিদর্শনের পরে, পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্তে অতিরিক্ত কিছু ঘর প্রাথমিক বিভাগকে ব্যবহার করতে দিচ্ছেন সুনীতিবালা সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা দাস বলেন, “প্রাথমিকের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিচারপতি সেটি বিবেচনা করে দেখতে বলেছেন।”
এ দিনের বৈঠকের পরে জলপাইগুড়ির অন্য প্রাথমিক স্কুল, যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা উপচে পড়েছে, কিন্তু ক্লাসঘর নেই, সেখানেও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়ার রাস্তা খুলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের আশা, এর ফলে, সব সরকারি প্রাথমিক স্কুলের পরিকাঠামোই উপযুক্ত ভাবে ব্যবহার করা যাবে। সদর প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরূপ দে বলেন, “ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।”